হানিমুন নয়, ‘ব্লাড মুন’! পথের কাঁটা সরাতেই এই প্ল্যান, সোনমকে আনা হচ্ছে কলকাতায়, কী কারণ?

মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে স্বামী রাজা রঘুবংশীকে খুনের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী সোনম রঘুবংশীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে এখন অনেকেই ‘হানিমুন নয়, ব্লাড মুন’ বলে অভিহিত করছেন। মেঘালয়ে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে। অভিযুক্ত সোনমকে গতকাল উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আজ তাকে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

এই ঘটনার সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর দিক হলো, যে ‘প্রেমিক’ রাজ কুশওয়াহার জন্য সোনমের বিরুদ্ধে এই ভয়াবহ অভিযোগ, সেই রাজ নাকি নিহত রাজা রঘুবংশীর শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিল। সোনমের পরিবারের পক্ষ থেকে ইন্দোরের গোবিন্দ নগর খারচা এলাকায় রাজার শেষকৃত্যে যোগদানের জন্য চারটি বা পাঁচটি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই গাড়িগুলোর মধ্যে একটির চালক ছিল রাজ। সোনমের বাবার বাড়ির প্রতিবেশী লক্ষণ সিং রাঠোর এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “রাজার শেষকৃত্যে আমি যে চারচাকাতে গিয়েছিলাম, রাজ সেটি চালাচ্ছিল। যদিও আমরা তার সঙ্গে কথা বলিনি। রাজ গ্রেফতার হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমে তার ছবি দেখে এই কথা মনে পড়ে।”

আজ ইন্দোর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পথের কাঁটা রাজাকে সরাতেই সোনম ও তার প্রেমিক রাজ আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিল। এই ঘটনায় সোনমের ভাড়াটে গুন্ডারা তাদের সঙ্গ দেয়। রাজ যদিও ঘটনাস্থলে ছিল না, তবে সে-ই বাকি তিনজনকে সুপারি দিয়েছিল। রাজ ও সোনম-সহ আরও দু’জনকে গতকালই উত্তরপ্রদেশ পুলিশ গ্রেফতার করে। আজ আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, এখনও যেখানে রাজা রঘুবংশীকে খুন করা হয়েছিল, সেই মেঘালয়ের পুলিশের তরফে কোনো বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়নি। ইন্দোরের অ্যাডিশনাল ডিসিপি (ক্রাইম) রাজেশ দন্ডোটিয়া জানিয়েছেন, রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডের দিকে নজর রাখা হচ্ছে এবং পরবর্তীতে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে যে, মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে বসেই রাজ এই খুনের ছক কষেছিল। সে সোনমের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। পুলিশ মনে করছে, যাতে কেউ তাকে সন্দেহ না করে, সেই কারণেই এই কৌশল নেওয়া হয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ডে রাজ ছাড়াও বিশাল চৌহান, আকাশ রাজপুত এবং আনন্দ কুর্মি নামের তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ইতিমধ্যেই ৭২ ঘণ্টার ট্রানজিট রিমান্ডে উত্তরপ্রদেশ থেকে সোনমকে মেঘালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মেঘালয় পুলিশ মঙ্গলবার সোনম রঘুবংশীকে পাটনার ফুলওয়ারি শরিফ থানায় নিয়ে আসে। শিলং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইন্দোরের বাসিন্দা রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সে। শিলং পুলিশ সোনমকে গাজিপুর থেকে আজ পাটনা, কলকাতা ও গুয়াহাটি হয়ে শিলং নিয়ে যাবে। বাকি ধৃতদের আগেই শিলং পুলিশ রিমান্ডে পেয়েছে। সূত্রের খবর, শিলং পুলিশ আজ বিকেলে বিমানে সোনমকে কলকাতায় নিয়ে আসছে। এই ঘটনা ঘিরে দেশজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য বিরাজ করছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy