
পঞ্চম বেতন কমিশনের অধীনে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (DA) মেটানোর সময়সীমা প্রায় শেষ হওয়ার পথে। রাজ্য সরকারের হাতে আর মাত্র ২ সপ্তাহের মতো সময় রয়েছে। এরই মাঝে এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা বদলের জন্য ফের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে রাজ্য, এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে। তবে এর মধ্যে অবশ্য বকেয়া ডিএ দেওয়ার কাজ কিছুটা এগিয়ে রাখছে সরকার।
সম্প্রতি সন্ময় মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন যে, বকেয়া ডিএ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দফতরের তরফ থেকে কোনও পদক্ষেপই করা হচ্ছে না। এই আবহে তিনি ডিএ মামলার অন্যতম আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে বিকাশবাবু জানান, “বকেয়া ডিএ যদি রাজ্য সরকার সময় মতো না মেটায়, তাহলে সুপ্রিম কোর্ট মূল মামলাটি (রাজ্য সরকারের দায়ের করা এসএলপি) খারিজ করে দিতে পারে।”
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের দায়ের করা স্পেশাল লিভ পিটিশন (SLP) যদি খারিজ করে দেওয়া হয়, তাহলে তা রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য এক বড় সুখবর হতে পারে। কারণ, সেক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্য সরকার পঞ্চম বেতন কমিশনের অধীনে বকেয়া ডিএ প্রদান করতে বাধ্য থাকবে। তবে শেষ পর্যন্ত কী হয়, এখন সেদিকেই নজর সব রাজ্য সরকারি কর্মীর।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে আছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মামলা। সুপ্রিম কোর্টে যে মামলাটি চলছে, সেটা পঞ্চম বেতন কমিশন সংক্রান্ত, যা ২০১৬ সাল থেকে চলছে। এই মামলাটি স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল (স্যাট), কলকাতা হাইকোর্ট হয়ে সুপ্রিম কোর্টে এসেছে। প্রথমে স্যাটে জয় পেয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু তারপর থেকে প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরাই জয় পেয়েছেন।
২০২২ সালে যখন প্রথমবার ডিএ মামলা সুপ্রিম কোর্টে উঠেছিল, তখন এই মামলার বিচারপতি ছিলেন জাস্টিস দীনেশ মাহেশ্বরী এবং জাস্টিস ঋষিকেশ রায়। এরপর এই মামলাটি তালিকাভুক্ত হয়েছিল জাস্টিস ঋষিকেশ রায় এবং জাস্টিস দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে। আবার ২০২৩ সালের মার্চ মাসে মামলাটি ওঠে জাস্টিস দীনেশ মাহেশ্বরী এবং জাস্টিস সঞ্জয় কুমারের এজলাসে। এরপর ২৮শে এপ্রিল, ২০২৩ সালের ডিএ শুনানি শেষবারের মতো এই এজলাসে উঠেছিল। এরপর জাস্টিস দীনেশ মাহেশ্বরী অবসর নেন। জাস্টিস ঋষিকেশ রায়ও অবসর নেন ২০২৫ সালের ৩১শে জানুয়ারি। তবে এবার সুপ্রিম কোর্ট ডিএ মামলায় গতি এসেছে, যা সরকারি কর্মীদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে।
রাজ্য সরকার এবং সরকারি কর্মীদের মধ্যে এই দীর্ঘদিনের ডিএ বিবাদ কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।