
উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে অবস্থিত পতঞ্জলির আচার্যকুলম স্কুল এবার বোর্ড পরীক্ষায় অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। উচ্চ মাধ্যমিক (ইন্টারমিডিয়েট) এবং মাধ্যমিক (উচ্চ বিদ্যালয়) উভয় পরীক্ষাতেই এই স্কুলের পাশের হার শতভাগ! ফল প্রকাশের পর থেকেই স্কুলের ক্যাম্পাসে বইছে আনন্দের বন্যা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সকলেই এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত।
মাধ্যমিকের ফল: ১৫৩ পরীক্ষার্থীর সকলের পাশ, গড় নম্বর ৮৬.৩০ শতাংশ
মাধ্যমিক পরীক্ষায় আচার্যকুলম থেকে মোট ১৫৩ জন পড়ুয়া অংশগ্রহণ করেছিল এবং তারা সকলেই সাফল্যের মুখ দেখেছে। এই স্তরে পড়ুয়াদের প্রাপ্ত নম্বরের গড় প্রায় ৮৬.৩০ শতাংশ, যা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। স্কুলের শীর্ষস্থান অধিকার করেছে অথর্ব, সে পেয়েছে ৯৯.৪০ শতাংশ নম্বর। ৯৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছে ধ্রুব এবং ৯৭.৮০ শতাংশ নম্বর পেয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে সনয়া সেজল। এছাড়াও, ৯৭.৬০ শতাংশ নম্বর পেয়ে চতুর্থ হয়েছে সহজ এবং অংশুমান ও কানহাইয়া কুমার দুজনেই ৯৭.৪০ শতাংশ নম্বর পেয়ে যৌথভাবে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২১ জন পড়ুয়া পাঁচটি বিষয়েই এ ওয়ান গ্রেড পেয়েছে এবং ৪৩ জন পড়ুয়া বিভিন্ন বিষয়ে ১০০-তে ১০০ নম্বর পেয়েছে। ২৫ জন পড়ুয়া পেয়েছে ৯৫ শতাংশের বেশি নম্বর।
উচ্চ মাধ্যমিকের ফল: ৯৭ জন পরীক্ষার্থীর শতভাগ পাশ, গড় প্রাপ্ত নম্বর ৮৮.৩৮ শতাংশ
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আচার্যকুলম থেকে মোট ৯৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল এবং তারাও শতভাগ পাশ করেছে। এই স্তরে স্কুলের গড় প্রাপ্ত নম্বর ৮৮.৩৮ শতাংশ। বিভাগ অনুযায়ী, বিজ্ঞান বিভাগে পাশের হার ৮৩.৫৯ শতাংশ, মানবীবিদ্যা (হিউম্যানিটিজ) বিভাগে ৯০.৬৪ শতাংশ এবং বাণিজ্য বিভাগে ৯০.৮৫ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিকে স্কুলের টপার হয়েছে সিদ্ধেশ, সে পেয়েছে ৯৯ শতাংশ নম্বর। মানবীবিদ্যা বিভাগ থেকে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে আর্যমন (৯৮.৬ শতাংশ) এবং বাণিজ্য বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছে রিদ্ধিমা (৯৮ শতাংশ)। এই স্তরে ১৪ জন পড়ুয়া পাঁচটি বিষয়েই এ ওয়ান গ্রেড পেয়েছে এবং ৩২ জন পড়ুয়া আলাদা আলাদা বিষয়ে ১০০-তে ১০০ নম্বর পেয়েছে।
আধুনিক ও বৈদিক শিক্ষার মেলবন্ধন: প্রধানমন্ত্রী মোদী দ্বারা উদ্বোধন
যোগগুরু স্বামী রামদেব এবং আচার্য বালকৃষ্ণ দ্বারা স্থাপিত এই পতঞ্জলি আচার্যকুলম স্কুল একটি আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ২০১৪ সালে তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই স্কুলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন। এই স্কুলের বিশেষত্ব হলো এখানে আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে বৈদিক শিক্ষার মেলবন্ধন ঘটিয়ে পড়ানো হয়। প্রাচীন গুরুকুল পদ্ধতির আদলে এখানে শিক্ষাদান করা হয়, তবে এটি সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই)-এর অধীনে পরিচালিত। শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক বিকাশে এই অনন্য শিক্ষাব্যবস্থা যে কতটা কার্যকরী, তা এবারের বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল থেকেই স্পষ্ট।