
আন্তর্জাতিক বাজারে চলমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে যেখানে সোনার দাম (Gold Price) ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী ছিল, সেখানে কিছুটা স্বস্তি মিলল। সপ্তাহের শুরু থেকেই সোনার দামে পতন দেখা গেছে, যা সাধারণ ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দাম কমলে বাজারে সোনার চাহিদা ফের বৃদ্ধি পেতে পারে।
বিশ্বজুড়ে চলমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বহু বিনিয়োগকারী নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে সোনায় বিনিয়োগ করছেন। সোনা তার নিজস্ব মূল্যের কারণে এবং মূল্য ধরে রাখার সক্ষমতার জন্য যেকোনো বিপদজনক সময়ে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়। বিশেষ করে করোনাভাইরাস মহামারীর পর থেকে সোনার প্রতি মানুষের আস্থা আরও বেড়েছে, কারণ এটি আর্থিক মন্দা বা অন্যান্য ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দিতে সাহায্য করে।
আগে বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল যে সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রাম ১ লাখ টাকা বা তারও বেশি হয়ে যাবে। তবে, শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া দরপতন সোমবার পর্যন্ত বজায় ছিল। মঙ্গলবার, ১০ জুন, বাংলার বাজারে ২২ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ৯০৮৫ টাকা প্রতি গ্রাম, যা আগের তুলনায় কিছুটা কম। একইভাবে, ১৮ ক্যারেট সোনার দাম হয়েছে ৭৪৬০ টাকা প্রতি গ্রাম। এটি মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি স্বস্তির খবর।
সোনার দাম কিছুটা কমলেও, রুপোর দাম (Silver Price) এখনও অনেকটাই উচ্চমুখী। বর্তমানে ১ কেজি রুপোর দাম দাঁড়িয়েছে ১০৫৬৮৮ টাকা। এই মূল্যও বাজারে খুব একটা কমতি দেখাচ্ছে না, যা রুপো ক্রেতাদের জন্য কিছুটা হতাশাজনক।
বিনিয়োগকারীদের জন্য সোনা এখনও একটি অন্যতম নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম। যদিও সোনার দাম মাঝেমধ্যে বেড়ে যায়, তবুও এই ধাতু দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়। বিশেষ করে দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা বা আন্তর্জাতিক বাজারে অর্থনৈতিক সংকট থাকলে, সোনা তার স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। এই কারণেই মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত শ্রেণির মানুষ সোনায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন।
বিশ্বব্যাপী চলতে থাকা অস্থিরতা এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সংকট সোনার দামের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। যখনই কোনো সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়, সোনার চাহিদা বাড়ে এবং দাম বৃদ্ধি পায়। আবার যখন পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়, তখন সোনার দাম কমে যেতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব, বৈদেশিক মুদ্রার দাম, সরকারের সিদ্ধান্ত এবং এমনকি স্বর্ণালঙ্কারের চাহিদাও সোনার দামের ওঠানামাকে প্রভাবিত করে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে সরাসরি প্রভাবিত করে।
যারা সোনা কিনতে চান, তাদের জন্য কিছু সাধারণ পরামর্শ রয়েছে। সোনার দাম যেকোনো সময় বেড়ে যেতে পারে, তাই দামের ওঠানামা বিশ্লেষণ করা খুবই জরুরি। সোনা কেনার সময় ৩ শতাংশ জিএসটি (গুডস অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স) যোগ হবে, যা মনে রাখতে হবে। এছাড়া, সোনা কেনার আগে বাজারের সঠিক পরিস্থিতি বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া ভালো।