
ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতকে ‘স্কুলে শিশুদের ঝগড়া’র সঙ্গে তুলনা করে বিতর্কের জন্ম দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রকাশ্যে অশালীন শব্দ ব্যবহারের অভিযোগের সাফাই দিতে গিয়ে ন্যাটো সম্মেলনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, এই দুই দেশকে থামানোর জন্য ‘কড়া শব্দ’ ব্যবহার করতে হয়েছে। ট্রাম্পের এই বিতর্কিত মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির নেপথ্যে ‘কড়া শব্দ’?
ন্যাটো সম্মেলনের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প দাবি করেন, ইজরায়েল ও ইরান তাদের মধ্যে ‘ভয়ঙ্কর লড়াই’ করছিল, যা ‘স্কুলে দুই শিশুর লড়াইয়ের’ মতোই ছিল। তিনি বলেন, “ওরা যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়ে যায়। ওদের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই হয়।… ওদের থামানো যায় না। ওদের দুই বা তিন মিনিট লড়াই করতে দিতে হয়। তারপর ওদের থামানো সহজ।” নিজের অশালীন শব্দ ব্যবহারের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, এমন পরিস্থিতিতে কঠোর ভাষা প্রয়োগ করাটা জরুরি ছিল।
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ন্যাটো সচিব মার্ক রাট। তিনি বলেন, “বাচ্চাদের থামানোর জন্য বাবাকে মাঝেমধ্যে কড়া শব্দ ব্যবহার করতে হয়।” এই সমর্থন পেয়ে ট্রাম্প যোগ করেন, “আপনাকে কঠোর শব্দ ব্যবহার করতে হয়। মাঝেমধ্যে নির্দিষ্ট শব্দ ব্যবহার করতে হয়।”
ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ও ট্রাম্পের ভূমিকা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করার কথা ঘোষণা করলেও, পশ্চিম এশিয়ায় এখনও সম্পূর্ণ শান্তি ফেরেনি। ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ সত্যিই থেমেছে কিনা, তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে জল্পনা চলছে। এই সংঘাতকালে ইজরায়েলের পক্ষে দাঁড়িয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে আক্রমণ করেছিল, যার পাল্টা জবাব হিসেবে ইরান মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায়। এমন এক সংবেদনশীল পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের এই ধরনের উপমা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদেরও বিস্মিত করেছে।
ন্যাটো সম্মেলনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু
নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনে ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধই আলোচনার একটি প্রধান বিষয় ছিল। ট্রাম্প ন্যাটো গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলিকে সামরিক খাতে খরচ ৫ শতাংশ করে বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে, ন্যাটো সরাসরি এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে কিনা, তা নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে।
ট্রাম্পের মন্তব্য একদিকে যেমন তার নিজস্ব যোগাযোগের ধরনকে তুলে ধরে, তেমনই অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মতো জটিল বিষয়কে সরলীকরণের প্রবণতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। এই মন্তব্যের প্রভাব আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কী হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।