
পূর্ব বর্ধমানের কিশোরগঞ্জ মনমোহনপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিলে খেতে বসে ছাত্র-ছাত্রীরা, কিন্তু খাবার মুখে ঠেকানোর পাত্রে দেখা গেল বিভাজন! হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা থালা, আলাদা বাসন, এমনকি রান্নার দলও পৃথক—এমন অস্বাভাবিক ব্যবস্থা নিয়ে তুলকালাম হইচই শুরু হয়েছে।
বিভাজনের আড়ালে কী পরিস্থিতি?
একই গোয়ালাঘর, আলাদা ওভেন
গ্যাস সিলিন্ডার একটাই; পাইপে দুই হাতে বেগে দুটি ওভেন চালু, রান্নার খরচ দ্বিগুণ।
রাঁধুনির স্বীকৃতি
একজন হিন্দু রাঁধেন হিন্দু শিক্ষার্থীদের, আরেকজন মুসলিম রাঁধেন মুসলিমদের। কোন কারণ জানেন না—নিজের মত অনুগামী রাঁধুনিরা শুধু “নির্দেশমতো” কাজ করছেন বলে জানান।
প্রধান শিক্ষকের বিবৃতি
“আমি পক্ষপাতিত্ব থেকে বিরত। এ খরচে স্কুলের উন্নয়ন কর্মসূচিতেও টাকা লাগানো যেত। চাইতাম—সব শিশুকে একসঙ্গে সুপুষ্ট উপহার দিতে, কিন্তু আমার হাতে কিছু নেই,”—বলেন প্রধান শিক্ষক।
প্রশ্নঅন্বয়ী প্রতিবেশীরা
দীর্ঘদিন চলে আসা রীতি
এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, বহু বছর ধরেই চলছিল এ ব্যবস্থা; কেউ মুখ খুলছেন না ‘কেন’—তাকে নিয়েই আদ্র প্রশ্ন।
জেলা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ কেন মুখ থুবড়ে আছেন?
দিনের পর দিন এ বিভাজন চললেও জেলা শিক্ষা সংসদ বা শিক্ষা দফতরের তরফে এখনও কোনো উদ্যোগ নেই।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মভিত্তিক এমন বিভাজন—যেখানে সমন্বয়, সম্প্রীতি আর মানবিক শিক্ষা দেয়ার কথা—সেখানেই তা ভেঙে দিচ্ছে প্রশ্নের যোগসূত্র। এখন দেখার, কীভাবে মিটবে এই অকাল ছেদ; না হলে বিজ্ঞান-গণিতের পাশাপাশি আমাদের ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজন সামাজিক বিজ্ঞানেও আরও একবার পাঠ!