
গত আট মাস ধরে সৌদি আরবের জুবাইলে এক নির্মাণ কোম্পানির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে—তারা টাকা দিচ্ছে না, খাবারও ঠিকমতো মিলছে না এবং কর্মীদের নথিপত্র আটকে রাখায় প্রায় ৬০ জন যুবক দেশে ফিরতে পারছেন না। এই আটকে পড়া যুবকদের মধ্যে একজন হালিশহরের রবিপ্রতাপ সিং। রবির পরিবারের সদস্যরা গভীর উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন। যদিও ছেলে ফোনে কথা বলতে পারছে, এটাই তাদের কাছে একমাত্র স্বস্তি।
রবিপ্রতাপের বাবা অভিমন্যু সিং জানিয়েছেন, তাঁরা হালিশহর থানাকে বিষয়টি জানিয়েছেন, কিন্তু এখনও কোনো সুরাহা হয়নি। তিনি বলেন, “হালিশহর থানাকে জানিয়েছি। তারা বলল, দেখছি। তবে এখনও কোনও কিছু হয়নি। প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংকেও জানিয়েছি। রাতে আমরা ঘুমোতে পারি না।” রবির মা সুনীতা দেবীও ছেলেকে নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা খুব চিন্তায় রয়েছি। ভয় লাগে, ওখানে না কিছু করে দেয়। ঠিকঠাক খেতে দেয় না। টাকাপয়সাও দেয় না।” রবির স্ত্রী জুহি সিং বলেন, “প্রথমে সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। টাকাও পাঠাতেন। তারপর থেকে আর টাকা দিচ্ছে না কোম্পানি। খাবারও ঠিকমতো দিচ্ছে না।”
দেশে ফেরার আকুতি রবির
সৌদি আরব থেকে ভিডিও কলে জুহিকে রবি জানান, তাঁরা দ্রুত দেশে ফিরতে চান। কিন্তু, কোম্পানি ভিসা ও অন্যান্য কাগজপত্র আটকে রেখেছে। রবি বলেন, “এখান থেকে যাওয়ার জন্য একটা এক্সিট পেপার লাগে। সেটা দিচ্ছে না। কোম্পানি বলছে, আমাদের কাছে নেই। আমরা বাড়ি ফিরতে চাই।”
অর্জুন সিংয়ের আশ্বাস ও রাজ্যের উদ্যোগ
রবিকে ফেরাতে ব্যারাকপুরের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের দ্বারস্থ হয়েছে তাঁর পরিবার। অর্জুন সিং জানান, প্রায় ৪০০ জন ভারতীয় সৌদি আরবে আটকে আছেন, যার মধ্যে ৬০ জন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তিনি রবিকে ফেরাতে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রীকে ইমেইল করেছেন। এছাড়াও, তিনি ব্যক্তিগতভাবে সৌদি আরবের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং দ্রুত রবিকে ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
রাজ্যের শাসকদলও রবিকে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে। হালিশহর পৌরসভার পৌরপ্রধান শুভঙ্কর ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁরা বিষয়টি মহকুমা শাসক, বিধায়ক এবং সাংসদকেও জানাবেন।