
বুধবার রাত থেকে পূর্ব সিকিমে শুরু হওয়া ভারী তুষারপাত পর্যটকদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতটাই তুষার জমেছে যে, ছাঙ্গু, নাথু লা এবং সিল্ক রুটের রাস্তায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে সিকিম প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাঙ্গু ও নাথু লা’র পারমিট ইস্যু বন্ধ রেখেছে। হোলির ছুটির মরশুমে সিকিমে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের একটা বড় অংশ ছাঙ্গু, নাথু লা বা সিল্ক রুট ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তুষারপাতের কারণে তাঁদের সেই আশা পূরণ হয়নি।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, রাস্তার কিছু কিছু জায়গায় বরফ এতটাই জমে গেছে যে সেগুলো পিচ্ছিল হয়ে উঠেছে। ফলে যান চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, “নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাস্তা পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।” এদিকে, যাঁরা এই গন্তব্যে যাওয়ার জন্য পারমিট নিয়েছিলেন, তাঁদের হয় হোটেলে অপেক্ষা করতে হচ্ছে, নয়তো অন্য কোনও জায়গায় ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে হচ্ছে।
উত্তর সিকিমে তুষারপাত, পর্যটকরা খুশি
পূর্ব সিকিমের এই পরিস্থিতির মধ্যেও উত্তর সিকিমের লাচেন, লাচুং-এর মতো জায়গায় তুষারপাত শুরু হলেও সেখানকার রাস্তা এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। ফলে এই এলাকায় বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা তুষারপাতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছেন। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই কারণে এখানেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত সিকিমে এমন তুষারপাতের পরিস্থিতি বজায় থাকতে পারে। সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, “পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে এই তুষারপাত হচ্ছে। পাহাড়ের পাশাপাশি হিমালয় সংলগ্ন উত্তরবঙ্গের সমতলেও তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই কমে গেছে এবং বৃষ্টি হচ্ছে।”
পর্যটকদের হতাশা
হোলির ছুটিতে সিকিমে আসা পর্যটকদের মধ্যে অনেকেই ছাঙ্গু লেকের সৌন্দর্য বা নাথু লা’র ঐতিহাসিক সিল্ক রুট দেখার জন্য উৎসাহী ছিলেন। কিন্তু তুষারপাতের কারণে তাঁদের পরিকল্পনায় বাধা পড়েছে। এক পর্যটক বলেন, “আমরা ছাঙ্গু আর নাথু লা দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু এখন হোটেলে বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই।” অনেকে আবার লাচেন বা লাচুং-এর দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের আবহাওয়ার আপডেট জেনে এবং সতর্কতা অবলম্বন করে ভ্রমণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তুষারপাতের এই পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রশাসন সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছে।