সাপের কামড়ে মৃত্যু মহিলার! হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃতদেহ নিয়ে কী করলেন প্রেমিক?

চণ্ডীগড়ে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় সাপে কামড়ানোর পর এক মহিলার মৃতদেহ জঙ্গলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে এক ই-রিকশা চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই সেক্টর ২৬-এর বরদানা মার্কেট বস্তির বাসিন্দা সুরজ পলাতক ছিল। কিন্তু, নিজের কুকীর্তির কথা এক সমাজকর্মীর কাছে ফাঁস করে দেওয়ায় সুরজ বিপাকে পড়ে এবং পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ই জুন এই ঘটনাটি ঘটে। নিহত মহিলার নাম রবিনা, যিনি অভিযুক্ত সুরজের সঙ্গেই একই বস্তিতে থাকতেন। তাই তাদের মধ্যে পূর্ব পরিচিতি ছিল। সমাজকর্মী মোহাম্মদ ইরশাদ-এর কাছে সুরজ জানায় যে, ১৪ই জুন সে এবং রবিনা সুখনা লেকে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে সিঁড়ির কাছে হাঁটার সময় সাপে কামড়ায় রবিনাকে। সুরজের দাবি অনুযায়ী, এরপর সে রবিনাকে রিকশায় বসিয়ে সেক্টর ১৬-এর জিএমএসএইচ (Government Multi-Speciality Hospital)-এর দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু মাঝপথেই রবিনার মৃত্যু হয়। তখন কী করবে বুঝতে না পেরে, পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে সুরজ ধনাস লেক এবং খুদা লাহোরার মধ্যবর্তী রাস্তার পাশে ঝোপঝাড়ে মৃতদেহটি ফেলে দেয়। গভীর রাতে বস্তিতে ফিরে আসে সুরজ এবং পরের দিন মণিমাজরার দিকে পালিয়ে যায়।

সমাজকর্মী মোহাম্মদ ইরশাদের বয়ানের ভিত্তিতে পুলিশ সুরজকে গ্রেফতার করে। সুরজকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, ১৪ই জুন রাত সাড়ে ৮টার দিকে রবিনা তাকে ফোন করে সুখনা লেকে দেখা করতে বলেন। সেই মতো ই-রিকশা নিয়ে সুরজ সেখানে পৌঁছে যায়।

সুরজ দাবি করেছে, যখন তারা সিঁড়ি থেকে নামছিল, তখন রবিনা চিৎকার করে বলেন যে তাকে সাপে কামড়েছে এবং কিছুক্ষণ পরেই তিনি জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান। এরপরই সুরজ তাকে ই-রিকশায় তুলে সেক্টর ১৬-এর সরকারি হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কিন্তু মাঝপথেই রবিনার মৃত্যু হয়। এরপর ভয়ে সুরজ গাড়ি ধনাস লেকের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে যায় এবং খুদা লাহোরা ব্রিজের কাছে একটি নির্জন এলাকায় রবিনার মৃতদেহ ফেলে দেয়।

ইতিমধ্যেই সুরজের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ১০৫ এবং ২৩৮-এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে, পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, রবিনার সাপে কামড়ানোর তত্ত্বটি সঠিক নয়। পুলিশ মনে করছে, ওই মহিলার মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। অভিযুক্ত সুরজকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত করার জন্য মহিলার ময়নাতদন্তের (Post-mortem) রিপোর্টের অপেক্ষা করছে পুলিশ। এই ঘটনা চণ্ডীগড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy