২৫শে জুন, দিনটা ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। ১৯৭৫ সালে এই দিনেই দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। সেই বিভীষিকাময় স্মৃতিকে স্মরণে রেখে আজ রাজ্যজুড়ে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ পালন করল ভারতীয় জনতা পার্টি। বিজেপির যুব মোর্চার এই কর্মসূচিতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র হননের অভিযোগ আনেন।
এদিন কলকাতার কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত এক বিশাল প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলান বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। মিছিলে নেতৃত্ব দেন শুভেন্দু অধিকারী। হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে স্লোগান – “গণতন্ত্র বাঁচাও, বাংলা বাঁচাও” – এই রণধ্বনিতে মুখরিত ছিল কলকাতার রাজপথ।
মিছিল শেষে ধর্মতলায় এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে তুলোধোনা করেন। তিনি বলেন, “১৯৭৫ সালে কংগ্রেস দল যেভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল, আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারও সেই একই পথে হাঁটছে। ভোট লুট, বিরোধী কণ্ঠরোধ এবং স্বৈরাচারী মনোভাব – এই তিন মন্ত্রেই চলছে তৃণমূলের শাসন।”
শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, “রাজ্যে গণতন্ত্র বিপন্ন। মানুষের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। পুলিশকে ব্যবহার করে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে শুরু করে লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে এই সরকার।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করে তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে গণতন্ত্রের পূজারী হিসেবে জাহির করলেও, কার্যক্ষেত্রে তিনি গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শত্রু। তাঁর সরকারের আমলে সংবিধানকে পদদলিত করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।”
বিরোধী দলনেতা কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার যেখানে সাধারণ মানুষের কল্যাণে নিরন্তর কাজ করে চলেছে, সেখানে রাজ্যের তৃণমূল সরকার শুধু দুর্নীতি আর স্বজনপোষণে ব্যস্ত। বাংলার মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বোকা বানানো হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “আমরা এই স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই চালিয়ে যাব। বাংলার বুকে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবই। আগামী দিনে তৃণমূলের পতন নিশ্চিত।”
এদিনের কর্মসূচি থেকে বিজেপি কর্মীরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শপথ নেন। শুভেন্দু অধিকারী জানান, আগামী দিনেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সংবিধান রক্ষা এবং গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিজেপি।
