
জামাইষষ্ঠীর সকালে মাংসের দোকানে কেনাকাটার জন্য লম্বা লাইন ছিল। আচমকাই কিছু বুঝে ওঠার আগেই একটি বেপরোয়া গাড়ি সজোরে ঢুকে পড়ে ভিড়ের মধ্যে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রবিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার হাবরায় এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে খবর, একজনকে গাড়ি চালানো শেখাতে গিয়েই এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আহতদের অবস্থা ও পুলিশের পদক্ষেপ:
দুর্ঘটনায় আহত সকলেই মাংস কিনতে এসেছিলেন। বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় জখম চারজনকে উদ্ধার করে দ্রুত হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে, দু’জনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের কলকাতার একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঘটনার পরই পুলিশ ঘাতক গাড়িটিকে আটক করেছে এবং একজনকে গ্রেফতার করেছে। তবে, গাড়িতে থাকা আরও একজন পলাতক রয়েছেন। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে হাবরা থানার পুলিশ।
ঘটনার বিবরণ:
বাঙালির শ্রেষ্ঠ পার্বণগুলোর মধ্যে জামাইষষ্ঠী অন্যতম। এই দিনে মিষ্টির দোকান হোক কিংবা মাংসের দোকান, সর্বত্রই সকাল থেকে লম্বা লাইন দেখা যায়। এই আবহে হাবরা থানা এলাকায় ঘটে গেল এই ভয়ঙ্কর ঘটনা। জানা গেছে, হাবরা ২ নম্বর গেট এলাকার একটি মাংসের দোকানে সকাল থেকেই ক্রেতাদের লম্বা লাইন ছিল। সেই সময় একটি প্রাইভেট গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দ্রুত গতিতে দোকানের মধ্যে ঢুকে পড়ে।
ঘটনার অভিঘাতে কয়েকজন এদিক-ওদিক ছিটকে পড়েন, এবং তাঁদের মধ্যে চারজন গুরুতর জখম হন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় কারও পায়ে আঘাত লেগেছে, আবার কারও চোট লেগেছে কোমরে অথবা হাতে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় হাবরা থানার পুলিশ। ঘাতক গাড়িটিকে ক্রেনের সাহায্যে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয়দের ক্ষোভ ও পুলিশের আশ্বাস:
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, চার চাকার গাড়িটি ২ নম্বর গেট থেকে প্রফুল্ল নগরের দিকে যাচ্ছিল। গাড়িতে মোট দু’জন ছিলেন; একজন গাড়ি চালানো শিখছিলেন এবং অপরজন তাঁকে সাহায্য করছিলেন। তখনই আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি দোকানের মধ্যে ঢুকে যায়। চোখের পলকে রক্তে ভিজে যায় রাস্তা।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। একজন পালিয়ে গেলেও অন্যজন পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। জনবহুল এলাকায় নিয়মের তোয়াক্কা না করে কীভাবে ড্রাইভিং শেখানো হচ্ছিল, তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন। একই সঙ্গে, ধৃত গাড়ি চালকের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বারাসাত জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া জানিয়েছেন, গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।