
বিজেপির যুব মোর্চার এক কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ফের একবার রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। তাঁর এদিনের বক্তৃতায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাজ্যকে নিশানা করার পাশাপাশি যে রাজনৈতিক বার্তা উঠে এসেছে, তা আগামী দিনে বাংলার রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ তৈরি করতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মঙ্গলবার কলকাতার বুকে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে শুভেন্দুর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। যুব মোর্চার কর্মীরা তাঁর বক্তৃতায় আপ্লুত হলেও, বিরোধী শিবিরের কাছে তা ছিল স্পষ্ট হুঁশিয়ারি। তিনি তাঁর চিরাচরিত আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন। আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি, এমনকি সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয় নিয়েও তিনি তাঁর কড়া মন্তব্য পেশ করেন।
বিশেষ করে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর ব্যক্তিগত আক্রমণ অনেককেই বিস্মিত করেছে। সাধারণত রাজনৈতিক বক্তৃতায় দলগত সমালোচনা থাকলেও, শুভেন্দু অধিকারী এদিন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন। এই ধরনের ব্যক্তিগত আক্রমণ কি শুধু রাজনৈতিক কৌশল, নাকি এর গভীরে অন্য কোনো বার্তা লুকিয়ে আছে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
বিশ্লেষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারীর এই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমা একদিকে যেমন দলের নিচুতলার কর্মীদের চাঙ্গা করবে, তেমনই অন্যদিকে শাসকদলের উপর চাপ বাড়াতে সাহায্য করবে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ধরনের বক্তব্য বিজেপির রণকৌশলেরই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, এই ধরনের লাগাতার আক্রমণ সাধারণ মানুষের মনে কতটা প্রভাব ফেলবে, নাকি এর ফলে শাসকদলের প্রতি সহানুভূতি তৈরি হবে, তা সময়ই বলবে।
শুভেন্দু অধিকারীর এদিনের বক্তব্য নিঃসন্দেহে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার খোরাক জুগিয়েছে। তাঁর প্রতিটি শব্দে ছিল তীব্রতা, যা থেকে স্পষ্ট যে, আগামী দিনে রাজ্য বিজেপি আরও আক্রমণাত্মক ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে চলেছে। এখন দেখার, শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এই আক্রমণের মোকাবিলায় কী কৌশল অবলম্বন করে এবং বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কোন দিকে মোড় নেয়।