
এটিএম ও সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার খোদ শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড, অর্থাৎ মেয়রের নিজের এলাকায় ঘটল এক চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনা। বুধবার সকালে সুকান্তপল্লি এলাকায় একটি বাড়িতে নেশাজাতীয় স্প্রে ব্যবহার করে পরিবারের সদস্যদের অচেতন করে লক্ষাধিক টাকার গয়না ও নগদ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই দুঃসাহসিক ঘটনা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সুকান্ত পল্লির বাসিন্দা সুনীল কুমার সিংয়ের বাড়িতে গভীর রাতে দুষ্কৃতীরা হানা দেয়। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, চোরেরা কোনো শক্তিশালী নেশাজাতীয় স্প্রে ব্যবহার করে বাড়ির সদস্যদের ঘুম পাড়িয়ে দেয়। এরপর তারা নির্বিঘ্নে ঘরে ঢুকে লকার ভেঙে নগদ অর্থ এবং প্রায় চার লক্ষ টাকার সোনার গয়না নিয়ে চম্পট দেয়। সকালে বাড়ির সদস্যরা ঘুম থেকে উঠে যখন ঘরের জিনিসপত্র এলোমেলো এবং লকার ভাঙা অবস্থায় দেখেন, তখনই চুরির বিষয়টি স্পষ্ট হয়। সঙ্গে সঙ্গে নিউ জলপাইগুড়ি থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করে।
গৃহকর্তা সুনীল কুমার সিং ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, “আমরা সবাই স্বাভাবিকভাবেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকালে উঠে দেখি ঘরের লকার ভাঙা এবং সমস্ত সোনার গয়না ও নগদ টাকা নেই। মনে হচ্ছে, আমাদের অচেতন করতে কোনো বিশেষ ধরনের নেশা জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করা হয়েছে।” তাঁর স্ত্রী মণিকা সিং আরও আতঙ্কিত স্বরে জানান, “আমাদের কোনো রকম স্প্রে করে এসব করেছে। এখনও মাথা ভার হয়ে রয়েছে।” তাঁদের কথায় স্পষ্ট, এই চুরির পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং আরও বেশি ভয়াবহ।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং জানিয়েছেন, চুরির ঘটনাটি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা সম্ভবত পরিচিত মুখ। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে অপরাধীদের চিহ্নিত করার জন্য।
মেয়রের ওয়ার্ডে এমন একটি অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে চুরি, শিলিগুড়ির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এটিএম ও সোনার দোকানে ডাকাতির পর এই ঘটনা যেন প্রমাণ করছে যে, অপরাধীরা আরও বেশি নির্ভীক ও কৌশলগত হয়ে উঠছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এখন পুলিশের কাছে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছেন, যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে এবং তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হয়। এই ঘটনা শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।