“শরীর তোমার, পছন্দ আমার”—ট্রাম্পের জয়ের পর নারীবিদ্বেষ বাড়ছে আমেরিকায়

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের প্রবণতা বেড়ে গেছে। ‘শরীর আমার, পছন্দ আমার’—নারীর প্রজনন ও পোশাকের স্বাধীনতার জন্য এই স্লোগান গোটা বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু ট্রাম্পের জয়ের পর স্লোগানটি উল্টো ব্যবহার হচ্ছে। বিশেষত ট্রাম্প ভক্তদের মধ্যে এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাঁরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক (যৌন এবং অপমানজনক) মন্তব্য ছড়াতে একাজ করছেন। তাঁরা বলছেন, ‘শরীর তোমার, পছন্দ আমার’।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক রাজনীতি বিষয়ক থিংকট্যাংক বা গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক ডায়ালগের (আইএসডি) একটি গবেষণা বলছে, ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘নারীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের প্রবণতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষত টিকটকে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি’।

‘শরীর তোমার, পছন্দ আমার’, ‘তোমার জায়গা রান্নাঘরে, ‘১৯ তম সংশোধনী বাতিল চাই’—এই স্লোগানগুলো ব্যবহার করে টিকটকে নারীদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমলা হেরে যাওয়ার পরে এই প্রবণতা এতটাই বেড়েছে—এটাকে নারীদের প্রতি হুমকিতে পরিণত হয়েছে।

সম্প্রতি নিক ফুয়েন্ট নামে এক শ্বেতাঙ্গ আন্দোলনকারীর এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া একটি পোস্ট বেশ সমালোচিত হয়। তিনি লিখেছিলেন, ‘শরীর তোমার, পছন্দ আমার, চিরতরে।’ তাঁর এই পোস্ট ৯ কোটি বার দেখা হয় এবং ৩৫ হাজারের বেশি রিপোস্ট হয়।

আইএসডি বলছে, ৭ ও ৮ নভেম্বর দুই দিনে নারীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক (যৌন এবং অপমানজনক) মন্তব্যের প্রবণতা আগের চেয়ে ৪৬০০ শতাংশ বেড়ে গেছে। টিকটক ব্যবহারকারী নারীরাও এই সব বিষয়ে অভিযোগ করছেন আগের চেয়ে বেশি।

ট্রাম্পের জয়ের পরে স্লোগানটিই নারীদের আক্রমণের ব্যবহার করা হলেও তাঁর ক্ষেত্রে নারীদের প্রতি আক্রমণের বিষয়টি নতুন নয়। এর আগে ট্রাম্প নিজে নারীদের নিয়ে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করে বেশ সমালোচিত হন। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প এমনও বলেছেন, ‘নারীরা চান বা না চান— তিনি তাঁদের সুরক্ষার করেই ছাড়বেন’।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy