
শয্যায় শোয়ানো ‘মরদেহ’, চোখে তুলসিপাতা, কপালে চন্দন, গলায় ফুলের মালা। শেষকৃত্যের আগে বৃদ্ধকে ঘিরে হাউমাউ করে কাঁদছেন পরিবারের সদস্যরা। ঠিক তখনই ঘটল অলৌকিক ঘটনা! আচমকাই নড়ে উঠল ‘মৃত’ বৃদ্ধের পা। মুহূর্তেই চমকে উঠলেন সকলে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলো হাসপাতালে, সেখানেই জ্ঞান ফিরল তার!
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের থানে জেলার উল্লাসনগরে। পরিবার জানিয়েছে, ৭০ বছর বয়সী অভিমান নামের ওই বৃদ্ধ দীর্ঘদিন ধরেই ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। মুম্বাইয়ের জেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৫ দিন আগে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
শনিবার সকালে হঠাৎই তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয় এবং তিনি জ্ঞান হারান। কোনও জ্ঞান না থাকায় পরিবার তাকে একটি অটোরিকশায় করে শিবনেরি হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের বাইরেই এক চিকিৎসক বৃদ্ধকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন এবং হাসপাতালের তরফে ডেথ সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়।
এরপর পরিবার ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে বৃদ্ধকে বাড়িতে নিয়ে আসে এবং শেষকৃত্যের প্রস্তুতি শুরু করে। পরিবারের সদস্যরা যখন শোকে মূহ্যমান, তখনই ঘটে সেই অপ্রত্যাশিত ঘটনা – বৃদ্ধের পা নড়ে ওঠে। এক মুহূর্ত দেরি না করে পরিবার তাকে দ্রুত স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান, বৃদ্ধ জীবিত আছেন!
যেদিন দুপুরে বৃদ্ধের শেষকৃত্যের আয়োজন করা হয়েছিল, সেই দিনই তিনি পরিবারের সঙ্গে বসে খাবার খান। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। যদিও সেই চিকিৎসক জানিয়েছেন যে, তিনি বৃদ্ধকে ভেন্টিলেশনে রাখার জন্য পরিবারকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারই ডেথ সার্টিফিকেট চেয়েছিল। নিজের ভুলের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ওই চিকিৎসক।
এই ঘটনাটি এক বিরল অলৌকিকতা এবং একই সাথে চিকিৎসকদের দ্রুত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সতর্কতার প্রয়োজনীয়তাকে সামনে এনেছে। একইসঙ্গে, পরিবারের জন্য এটি শোক থেকে পরম আনন্দের এক অবিশ্বাস্য মুহূর্ত।