“শত্রুর যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুত”- হুঙ্কার ইরানের সেনাবাহিনীর

শত্রুর যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনী পূর্ণ প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির সেনাবাহিনীর স্থল ইউনিটের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিউমার্স হেইদারি। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই দাবি করেন।

জেনারেল হেইদারি বলেন, ‘‘ইরানের স্থলবাহিনী যে কোনো হুমকির জবাব দিতে সক্ষম হওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি বজায় রেখেছে। আমরা ইসলামি বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির নির্দেশনা অনুসরণ করছি।’’ তিনি আরও যোগ করেন, ইরানের বিরুদ্ধে যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সব পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।

দেশের টেকসই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সীমান্তে ইরানের স্থলবাহিনীর ১১টি ব্রিগেড মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। জেনারেল হেইদারি সতর্ক করে বলেন, ‘‘ইরান সবসময় হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনীর প্রস্তুতি এবং শক্তি এসব হুমকি প্রতিহত করেছে। কোনো শত্রু যদি বোকার মতো আমাদের দেশ আক্রমণ করার কথা ভাবে, তাহলে তারা অনুতপ্ত হবে। স্থলবাহিনীর যুদ্ধ প্রস্তুতির মুখোমুখি হলে তাদের পরিকল্পনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হবে।’’

এদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি সম্প্রতি জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি চিঠি সংযুক্ত আরব আমিরাতের একজন দূতের মাধ্যমে তার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে চিঠির বিষয়বস্তু এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে নিয়ে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসতে এবং আলোচনায় বসতে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, চুক্তি না হলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। তবে ইরান এই চাপের মুখে আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ইরানের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, চাপের মুখে তারা কোনো ধরনের আলোচনায় অংশ নেবে না এবং যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় তাদের সশস্ত্র বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

ইরানের এই দৃঢ় অবস্থান আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলে পুরো অঞ্চলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ইরানের সামরিক প্রস্তুতি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অবস্থানের মধ্যে সাম্প্রতিক এই বক্তব্য পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরানের সেনাবাহিনীর এই প্রস্তুতির ঘোষণা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। বিশ্ববাসীর চোখ এখন মধ্যপ্রাচ্যের দিকে, যেখানে উত্তেজনা ক্রমাগত বাড়ছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy