
মুম্বইয়ের প্রসিদ্ধ সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির তার আয়ের সমস্ত পুরনো রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। কোটি কোটি ভারতবাসীর গভীর বিশ্বাস ও आस्थाের কেন্দ্র এই মন্দিরটি ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে শুধুমাত্র ভক্তদের দানের মাধ্যমেই ১৩৩ কোটি টাকা আয় করেছে, যা এই মন্দিরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বার্ষিক উপার্জন।
বেলা জয়সিংহাইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, এর আগের অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০২৩-২৪ সালে সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরের মোট আয় ছিল ১১৪ কোটি টাকা। সেই হিসেবে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে মন্দিরের আয় প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষের অনুমান, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের শেষে এই আয় আরও বেড়ে ১৫৪ কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে।
মন্দিরের প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ভক্তদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, অনলাইন লেনদেন এবং সোনা-রুপোর দানের মাধ্যমেই এই বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ হয়েছে। প্রতি বছর মন্দিরে ভক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেই সঙ্গে বাড়ছে অনলাইন লেনদেনের পরিমাণও। এই কারণে মন্দিরের আয় ক্রমশ বাড়ছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সোনা ও রুপোর মাধ্যমে মন্দিরে প্রায় ৭ কোটি টাকা দান জমা পড়েছে। অনুদান বাক্সে জমা পড়েছে ৯৮ কোটি টাকার নগদ অর্থ। এছাড়াও, পূজা বুকিং এবং প্রসাদের কুপন বিক্রি করে আরও ১০ কোটি টাকা আয় হয়েছে।
প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত, যার মধ্যে বলিউড তারকা থেকে শুরু করে বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন, গণেশ চতুর্থীর বিশেষ দিনে সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরে এসে পুজো দেন। অন্যান্য উৎসবের সময়ও এখানে ভক্তদের বিপুল সমাগম দেখা যায়। সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরের মতোই ভারতের অন্যান্য বহু ধর্মীয় স্থানেও ভক্তদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে অনুদান আসে। অন্ধ্রপ্রদেশের ভেঙ্কটেশ্বরা মন্দিরের বার্ষিক আয় প্রায় ১৫০০ থেকে ১৬৫০ কোটি টাকা, যা সম্পূর্ণরূপে অনুদানের মাধ্যমেই অর্জিত হয়। অন্যদিকে, কেরালার পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের বার্ষিক আয় প্রায় ৭৫০ থেকে ৮০০ কোটি টাকা।
সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির ট্রাস্ট এই বিপুল পরিমাণ অনুদানের অর্থ মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তা, সম্প্রসারণ, মন্দিরের কর্মীদের বেতন, শিক্ষা ও চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান, দরিদ্রদের সাহায্য এবং বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ব্যয় করে থাকে। ভক্তদের দেওয়া এই অর্থ সমাজের কল্যাণেও ব্যবহৃত হয়, যা এই মন্দিরের প্রতি মানুষের বিশ্বাস ও শ্রদ্ধাকে আরও দৃঢ় করে তোলে।