যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের অনুমতি পাওয়ার পরপরই যুদ্ধের ১০০০তম দিনে দীর্ঘপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র এটিএসিএমএস দিয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডে আঘাত হেনেছে ইউক্রেন। গত মঙ্গলবার কিইভ নতুন পাওয়া সুযোগ ব্যবহার করে রাশিয়ায় ছয় থেকে আটটি এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছে মস্কো। এমন পরিস্থিতিতে প্রথমবারের মতো তারা আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র। বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের এসব ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধের মোড় ঘোরাতে পারে।
জানা গেছে, মার্কিন আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) হলো স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা আগে কিয়েভের হাতে থাকা অস্ত্রের চেয়ে অনেক বেশি দূরে আঘাত হানতে পারে। ১৯৭০ ও ৮০-এর দশকের শেষদিকে এটিএসিএমএস নিয়ে প্রায়ই কথাবার্তা হতো। ১৯৮৬ সালের দিকে রিগ্যান যুগের শেষদিকে প্রথম এর উৎপাদন করা হয়। ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে তারা সেবা দিতে শুরু করে। ১৯৯১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অপারেশন ডেজার্ট স্টর্মের অধীনে এটি প্রথম মোতায়েন করেছিল। এটিএসিএমএস-এর পরিসীমা প্রায় ১৯০ মাইল। এই দূরত্ব ব্রিটিশ সরবরাহকৃত স্টর্ম শ্যাডো ও ফরাসি সরবরাহ করা স্কাল্প ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে দীর্ঘ, যার পরিসীমা ১৫৫ মাইল (২৪৯ কিলোমিটার)। এটিএসিএমএস শুধু অনেক দূর যায় না; খুব দ্রুতগতিতে গমন করে, যা ম্যাক-৩ বা তিন গুণ শব্দের গতি ধারণ করে। আর ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আটকানো কঠিন করে তোলে। গুলি ছোড়ার স্থানের ওপর নির্ভর করে, তবে রাডার সিস্টেমে এটিএসিএমএস শনাক্ত করা কঠিন হতে পারে।
যুদ্ধের মোড় কি ঘুরিয়ে দেবে
কিয়েভে নিযুক্ত এক পশ্চিমা কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেন, রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলায় ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের কারণে যুদ্ধ এখন রাশিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। রাশিয়ার জনগণও যুদ্ধের ভয়াবহতা আঁচ করতে পারবে। ফলে যুদ্ধ আর একতরফা ইউক্রেনের ভূখণ্ডে থাকছে না। তবে রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দিকেই নজর দিতে হবে। পারমাণবিক শক্তিধর দেশটি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নিজেদের অন্যতম উচ্চতায় নিয়ে গেছে। সর্বশেষ ইউক্রেনের এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে তারা। এর মানে, ভয়ংকর অস্ত্র ব্যবহার করেও প্রথম দফায় হেরে গেছে ইউক্রেন।