প্রতিদিনের সংসারের অস্থিরতা কখনো কখনো একাধিক রূপে প্রকাশ পায়। অনেকেই বলেন, শাশুড়ি–পুত্রবধূর অশান্তির সূত্রপাত হয় হেঁশেলের দখল নিয়ে, আর সেই প্রশ্ন এবার পৌঁছালো হাইকোর্টে। কলকাতার চিৎপুরের ৬২ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা তাঁর একমাত্র পুত্র এবং পুত্রবধূর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় বৃদ্ধার অভিযোগ, চিৎপুরে তাঁর স্বামী দু’টি বাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিলেন, যার মধ্যে একটি বাড়িতে তাঁর ছেলে এবং পুত্রবধূ সংসার করছেন, এবং অন্য বাড়ির রান্নাঘরও তারা দখল করে নিয়েছে। এর ফলে বৃদ্ধাকে একটিমাত্র ঘরে থাকতে হচ্ছে, যেখানে তাঁকে রান্নাও করতে হয়।
মামলার প্রথম শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ মন্তব্য করেন, “তাহলে কি পুলিশকে রান্নাঘরে ঢুকতে হবে দখল ঠিক করতে?” এই মন্তব্যে প্রকাশ পায় আদালতের হতাশা। প্রথমে, বিচারপতি মামলাটি সেনিয়র সিটিজেনদের জন্য তৈরি ফোরামে পাঠানোর কথা ভাবলেও, শেষে সিদ্ধান্ত নেন, চিৎপুর থানাকে বৃদ্ধার বাড়িতে একদিন অন্তর মহিলা কনস্টেবল পাঠিয়ে নজর রাখতে হবে, যাতে অশান্তি আরও না বাড়ে। আদালত বৃদ্ধাকে সংশ্লিষ্ট ফোরামে আবেদন করার নির্দেশ দেয় এবং এই সময়ের মধ্যে পুলিশকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বৃদ্ধার আইনজীবী জানান, তার পুত্রের স্ত্রীর অসুস্থতার পর বৃদ্ধা নিজের গ্যাস ওভেন এবং অন্যান্য রান্নার সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়েছেন, এবং বর্তমানে মামলাটি তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে করা হয়েছে। যদিও বৃদ্ধার মেয়েদের দিকেই সন্দেহের আঙ্গুল উঠেছে, তবে তৃতীয় পক্ষের পরিচয় স্পষ্ট করা হয়নি।
প্রথমদিকে, বিচারপতি ঘোষ মামলায় কোনো হস্তক্ষেপ করতে চাননি এবং বলেন, এটি একটি ব্যক্তিগত বিষয়, যেখানে পুলিশের হস্তক্ষেপ অপ্রয়োজনীয়। তবে পরে, আইনজীবীর কাতর আর্জিতে আদালত পুলিশকে সাময়িকভাবে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেন।
এখন দেখা যাক, এই রান্নাঘরের দখলের বিতর্ক শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এবং হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের পর কি পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে।