দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই পর্যটকদের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। এবছর সেই ভিড় আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছে প্রশাসন, কারণ দিঘায় প্রথমবারের মতো আয়োজিত হতে চলেছে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। আর সেই অনুষ্ঠান ঘিরেই হোটেল ভাড়া নিয়ে যেন কোনও কালোবাজারি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই জেলা প্রশাসন নিয়েছে কঠোর পদক্ষেপ।
হোটেল ভাড়ায় অনিয়ম ধরা পড়লে হোটেল মালিককে দিতে হতে পারে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা। এমনকি বাতিল হতে পারে হোটেলের লাইসেন্স এবং বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হতে পারে বিদ্যুৎ সংযোগও। সোমবার নিউ দিঘার জাহাজবাড়িতে ডিএসডিএ (দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ)-র কার্যালয়ে হোটেল মালিক সংগঠনগুলির সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন—
ডিএসডিএ-র চেয়ারম্যান ও জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি, অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌভিক চট্টোপাধ্যায় ও নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিএসডিএ-র প্রশাসক নীলাঞ্জন মণ্ডল সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা।
জেলাশাসক জানিয়েছেন, “প্রতিটি হোটেলে রুম ভাড়ার নির্ধারিত তালিকা স্পষ্টভাবে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। সেই তালিকায় ডিএসডিএ-র হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইন নম্বরও থাকবে, যেখানে পর্যটকরা অভিযোগ জানাতে পারবেন।”
পরিচ্ছন্নতা ও পরিবেশ বজায় রাখতে বাড়তি নজর:
পর্যটকদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে শুধুমাত্র ভাড়া নয়, হোটেলগুলোর পরিচ্ছন্নতা নিয়েও কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রশাসন। হোটেলগুলিকে বাধ্যতামূলকভাবে শুকনো ও পচনশীল বর্জ্য আলাদা করে সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে এবং তা নির্দিষ্ট গাড়িতে তুলে দিতে হবে।
হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গেও একমত প্রশাসন:
দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্রও স্বীকার করেছেন, সংগঠনের বাইরে থাকা কিছু হোটেল ও হোমস্টে রুম ভাড়ায় অনিয়ম করছে, যা গোটা দিঘার ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তাঁর কথায়, “আমরা প্রশাসনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছি এবং এর বাস্তবায়নে সহযোগিতা করব।”
পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি:
হোটেল মালিকদের তরফে মন্দির ঘিরে বাড়তি যানজট মোকাবিলায় সড়ক সম্প্রসারণ, নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন ও অন্যান্য পরিকাঠামো সংস্কারের দাবি জানানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন রথে, নজরে থাকবে দিঘা:
৩০ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বোধন করেছিলেন দিঘার জগন্নাথ মন্দির। তিনি নিজেই থাকবেন আসন্ন রথযাত্রায়। প্রশাসনের আশঙ্কা, রথ উপলক্ষে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হতে পারে, তাই সমস্ত দিক থেকে প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে।
পর্যটকদের আশ্বাস:
প্রশাসনের এই কড়া পদক্ষেপে খুশি পর্যটকরা। তাঁদের মতে, এতে ভাড়া সংক্রান্ত সমস্যা অনেকটাই কমবে এবং রথযাত্রার সময় আরামদায়ক ও স্বচ্ছন্দ ভ্রমণ উপভোগ করা যাবে।
