
আর কদিন পরেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বাঙালির অন্যতম প্রধান উৎসব রথযাত্রা। এই দিনে জগন্নাথদেব, বলরাম এবং শুভদ্রার নিষ্ঠাভরে পূজা করার পাশাপাশি কিছু বিশেষ টোটকা মেনে চললে জীবনের সকল জটিলতা দূর হতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয়। গেটি ইমেজেস এবং অন্যান্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, জ্যোতিষ এবং লোকবিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে এই টোটকাগুলি বাতলানো হয়েছে। জেনে নিন কী কী।
১. ১১ রকমের অর্পণ: রথের দিন যে কোনও জগন্নাথ মন্দিরে হলুদ রঙের নতুন বস্ত্রের উপর ১১ রকমের ফল, ১১ রকমের মিষ্টি এবং ১১টি কয়েন রেখে অর্পণ করুন। এরপর আপনার মনের ইচ্ছা জগন্নাথদেবের কাছে জানান। মনে করা হয়, এতে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়।
২. রথের পরের দিন গঙ্গাস্নান: রথযাত্রার পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে গঙ্গাস্নান করতে পারলে তা অত্যন্ত শুভ ফলদায়ী হয়। যদি গঙ্গা স্নান সম্ভব না হয়, তবে ঘরেই গঙ্গাজল মিশিয়ে স্নান করা যেতে পারে।
৩. নিরামিষ আহার: রথের দিন সম্পূর্ণ নিরামিষ আহার করুন। বাড়িতে কোনও রকম আমিষ রান্না না করাই ভালো। এই দিনে সাত্ত্বিক আহার গ্রহণ করা পুণ্যের কাজ বলে মনে করা হয়।
৪. প্রদীপ প্রজ্জ্বলন: জগন্নাথদেবের মন্দিরে এই দিন প্রদীপ জ্বালানো অত্যন্ত শুভ। একটি মাটির প্রদীপে ঘি এবং দুটো লবঙ্গ দিয়ে যে কোনও জগন্নাথ মন্দিরে জ্বালিয়ে রাখুন। এতে দেব কৃপা লাভ হয়।
৫. ময়ূরের পালক অর্পণ: জগন্নাথদেবের মন্দিরে এই দিন ময়ূরের পালক অর্পণ করতে পারলে তা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। ময়ূরের পালক ভগবান কৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয়, তাই এটি অর্পণ করলে শুভ ফল মেলে।
৬. সাদা ও হলুদ ফুল: জগন্নাথদেবকে এই দিন সাদা ও হলুদ রঙের ফুল অর্পণ করুন। এতে দেবের বিশেষ কৃপা লাভ হয় এবং জীবনে শান্তি আসে।
৭. রথ টানা: এই দিন অবশ্যই জগন্নাথদেবের রথ টানুন। যদি আপনার বাড়ির সামনে দিয়ে বড় রথ না যায়, তবে বাচ্চাদের ছোট রথের দড়ি ধরেও টানতে পারেন। রথ টানাকে অত্যন্ত পুণ্যের কাজ বলে মনে করা হয়।
৮. বৃক্ষরোপণ: রথের দিন বাড়িতে গাছ লাগানো অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এই দিনে বাড়িতে নতুন গাছ লাগাতে পারেন। এতে সংসারে সুখ-শান্তি বৃদ্ধি পায়।
৯. দান-ধ্যান: রথের দিনটি দান করার জন্য খুবই শুভ। নিজের সাধ্যমতো এই দিন দান-ধ্যান করুন। বস্ত্র, খাদ্য বা অর্থ দান করলে তা পুণ্য সঞ্চয়ে সহায়ক হয়।
রথযাত্রা কেবল একটি উৎসব নয়, এটি ভক্তি এবং আধ্যাত্মিকতার এক অনন্য মিলন। এই টোটকাগুলি মেনে চললে জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে বলে ভক্তদের বিশ্বাস। তাই আর কদিন পরেই আসছে রথযাত্রা, প্রস্তুত হোন এই বিশেষ দিনটিকে নিষ্ঠা ও ভক্তির সাথে পালন করার জন্য।