“যে নির্দেশ দিয়েছে, তা ঠিক নয়”-যুক্তরাষ্ট্রে বরখাস্ত কর্মীদের পুনর্বহালের নির্দেশ আদালতের

সরকারি খরচ কমাতে ব্যাপক ছাঁটাইয়ের পথে হেঁটেছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত আদালতের দ্বারা খারিজ হয়ে গেছে। ক্যালিফোর্নিয়া ও মেরিল্যান্ডের জেলা বিচারকরা বৃহস্পতিবার একযোগে নির্দেশ দিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসনকে ১৯টি সরকারি এজেন্সি থেকে ছাঁটাই করা হাজার হাজার প্রবেশনারি কর্মীকে পুনর্বহাল করতে হবে।

ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি সরকারি এজেন্সিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিল, চলতি সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় দফার ছাঁটাই এবং বাজেট হ্রাস কার্যকর করতে হবে। কিন্তু তার আগেই আদালতের এই রায় এসেছে। মেরিল্যান্ড ও ক্যালিফোর্নিয়ার দুই বিচারক আলাদাভাবে রায় দিয়ে জানিয়েছেন, ছাঁটাইয়ের জন্য প্রশাসনের নির্দেশে আইনি ত্রুটি রয়েছে এবং কর্মীদের অবিলম্বে কাজে ফিরিয়ে আনতে হবে।

মেরিল্যান্ডের জেলা বিচারক জেমস ব্রেডার তাঁর রায়ে বলেছেন, “১৮টি এজেন্সি যারা প্রবেশনারি কর্মীদের ছাঁটাই করেছে, তারা সরকারি কর্মী ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে নির্ধারিত নিয়ম মানেনি। যেভাবে এই ছাঁটাই হয়েছে, তাতে মনে হয় না প্রতিটি কর্মীর কাজের মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” তিনি ইউএসএইড, ফিনান্সিয়াল প্রোটেকশন ব্যুরো, পরিবেশ সুরক্ষা এজেন্সি-সহ অন্যান্য এজেন্সিকে কর্মীদের পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি এই এজেন্সিগুলোর ছাঁটাই প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছিল।

অন্যদিকে, ক্যালিফোর্নিয়ার জেলা বিচারক উইলিয়াম অ্যালসাপ বলেছেন, “প্রতিরক্ষা, কৃষি, স্বরাষ্ট্র ও রাজস্বের মতো আটটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছাঁটাই কর্মীদের পুনর্বহাল করতে হবে। সরকার কর্মী কমাতে পারে, তবে তার জন্য সঠিক যুক্তি ও পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট অফিসের (ওপিএম) দেওয়া নির্দেশ আইনসম্মত নয়।”

ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি ছিল, তারা প্রতিটি কর্মীর কার্যক্ষমতার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বিচারকরা এই যুক্তি গ্রহণ করেননি। প্রবেশনারি কর্মীরা সম্প্রতি নিয়োগপ্রাপ্ত এবং তাঁদের আরও এক বছরের কাজের মেয়াদ বাকি ছিল। এরপর তাঁরা স্থায়ী ভিত্তিতে নতুন ভূমিকায় কাজ করার সুযোগ পেতেন।

এই রায় ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “বিচারবিভাগ প্রশাসনের অধিকারে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে। প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। কয়েকজন জেলা বিচারক তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারে না। আমরা এই অসাংবিধানিক নির্দেশের বিরুদ্ধে লড়ব।”

এদিকে, আদালতের এই নির্দেশের ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় দফার ছাঁটাই পরিকল্পনা ব্যাহত হয়েছে। আগামী দিনে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় কি না, সেদিকে নজর রয়েছে সকলের।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy