যুব-আবাস যাচ্ছে বেসরকারি হাতে, সরকারি খরচে লাগাম টানতে নয়া পরিকল্পনা

রাজ্য সরকারের অধীন ৩৪টি যুব-আবাসের দায়িত্বভার ১৫ বছরের জন্য বেসরকারি সংস্থাকে লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নবান্নের কর্তাদের দাবি, এর ফলে যুব-আবাসের পরিষেবার মান উন্নত হবে এবং ভাড়া বাবদ সরকারের বিপুল টাকাও রোজগার হবে।

মূলত ছাত্রছাত্রীদের থাকার জন্যে সরকারি অর্থানুকূল্যে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ইউথ হস্টেল গড়ে উঠেছিল। যার দেখভাল করে রাজ্য ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তর। দপ্তরের আধিকারিকদের বক্তব্য, যুব-আবাস রক্ষণাবেক্ষণে বছরে সরকারের বেশ কয়েক কোটি টাকা খরচ হয়, কিন্তু রোজগার হয় যৎসামান্য। অর্থ দপ্তর থেকে জানিয়ে দিয়েছে, যুব-আবাস চালাতে বাজেট থেকে ফি-বছর অকাতরে টাকা খরচ করা যাবে না।

খরচ নিজেদেরই জোগাড় করতে হবে। কিন্তু সরকারি ব্যবস্থাপনায় তা অসম্ভব। সে জন্যেই যুব-আবাসের ভার বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত।

বেসরকারি সংস্থাকে যুব-আবাস লিজ দেওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন, যুব-আবাসের ঘর শুধুমাত্র পর্যটকদেরকেই ভাড়া দিতে হবে। পর্যটকদের সুরক্ষায় নিরাপত্তারক্ষী রাখতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি বা ছাত্র-যুবরা ভাড়ায় ৫০ শতাংশ কনসেশন পাবেন। যুব-আবাসে দু’টি বাতানুকূল রুম আলাদা করে রাখতে হবে দপ্তরের মনোনীত অতিথিদের জন্যে। এ ছাড়াও জঞ্জাল সাফাই, অগ্নিনির্বাপণ এবং ছোটখাট রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব লিজ নেওয়া সংস্থাকেই পালন করতে হবে। ক্যান্টিনের সুবিধাও রাখতে হবে।

বিভিন্ন যুব-আবাস লিজ দেওয়ার ক্ষেত্রে এক-এক জায়গায় এক-এক রকম বেস প্রাইস ধরা হয়েছে। যেমন দিঘায় বেস প্রাইস ধার্য হয়েছে ২৩ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা। এখানে মোট রুমের সংখ্যা ৩২টি। ১০৭ জন থাকতে পারেন। তবে সবথেকে বেশি বেস প্রাইস ধার্য হয়েছে গজোলডোবা ইউথ হস্টেলের জন্য। এখানে ৩৭টি রুম রয়েছে। থাকার ব্যবস্থা ৮২ জনের। বেস প্রাইস ৮২ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা।

বেস প্রাইসের উপর নির্ভর করে লিজ নেওয়া সংস্থাকে প্রতিমাসে সরকারকে ভাড়া দিতে হবে। ভাড়া বাবদ সরকারের আয় বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়াও, বেসরকারি সংস্থার ব্যবস্থাপনায় যুব-আবাসের পরিষেবার মান উন্নত হবে বলেও মনে করা হচ্ছে।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy