যুদ্ধ আবহে দেশজুড়ে সিভিল ডিফেন্স মক ড্রিল কেন?-জেনেনিন সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর

ভারত সরকার আগামী ২০২৫ সালের ৭ মে দেশব্যাপী একটি বড় মাপের সিভিল ডিফেন্স মক ড্রিল বা মহড়ার আয়োজন করতে চলেছে। দেশের মোট ২৪৪টি জেলায় একযোগে পরিচালিত হবে এই মহড়া। যুদ্ধ, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বা বোমাবর্ষণের মতো গুরুতর জরুরি পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষ কতটা প্রস্তুত, সেটাই এই মহড়ার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হবে।

মহড়ায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?

নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই মহড়ার সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে:

বিমান হামলার সতর্কতামূলক সাইরেন বাজানো।
শহরজুড়ে সাময়িকভাবে ব্ল্যাকআউট বা আলো নিভিয়ে অন্ধকার করে দেওয়া।
নাগরিকদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার অনুশীলন।
পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেড, উদ্ধারকারী দল সহ প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ।
স্কুল ও কলেজগুলিতে শিক্ষার্থীদের আত্মরক্ষা ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ প্রদান।
গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রেডিও এবং টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থা কতটা কার্যকর থাকে, তা পরীক্ষণ।
গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনাগুলিকে রক্ষা করার জন্য ছদ্মবেশ বা ক্যামোফ্লেজ প্রস্তুতি যাচাই।
সঙ্কটকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবহৃত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও ছায়া কেন্দ্রগুলির কার্যকারিতা পরীক্ষা।

কেন এই মহড়ার আয়োজন?

বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে সামরিক উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবস্থায় ভারত সরকার মনে করছে, শান্তির সময়েই জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতিকে আরও জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি। এই মহড়া কোনো নির্দিষ্ট হুমকির প্রতিক্রিয়া নয়, বরং এটি একটি পূর্বসতর্কতামূলক এবং প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবেই আয়োজন করা হচ্ছে। সরকারের প্রধান লক্ষ্য হলো, প্রকৃত কোনো দুর্যোগের সময় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, তাদের শান্ত থাকতে সাহায্য করা এবং কার্যকরভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত করে তোলা।

কোন কোন জেলা অংশ নিচ্ছে?

এই মহড়া প্রধানত দেশের সেইসব ‘সিভিল ডিফেন্স জেলা’-গুলিতে পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে ইতিমধ্যেই দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশেষ প্রশিক্ষণ, স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী এবং প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। সারাদেশের মোট ২৪৪টি জেলা এই মহড়ার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

নাগরিকদের প্রতি নির্দেশাবলী:

মহড়ার সময় সাধারণ মানুষের কাছে অনুরোধ, আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত থাকুন এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে নির্দেশাবলী দেওয়া হবে, তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলুন। জরুরি অবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস, যেমন – পানীয় জল, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, টর্চলাইট ইত্যাদি হাতের কাছে রাখুন। কোনো রকম গুজব বা ভুল তথ্যে কান না দিয়ে কেবলমাত্র সরকারি সূত্র থেকেই সঠিক তথ্য সংগ্রহ করুন। মহড়া চলাকালীন বিদ্যুৎ বা মোবাইল পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকতে পারে; এমন পরিস্থিতিতে রেডিও বা সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে আপডেট গ্রহণ করুন।

সম্ভাব্য প্রভাব:

মক ড্রিল চলাকালীন কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হতে পারে, মোবাইল নেটওয়ার্কের কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে, অথবা কিছু সময়ের জন্য রাস্তাঘাট বন্ধ থাকতে পারে। এই সব ব্যবস্থা মহড়ারই অংশ। সাধারণ মানুষকে এই সময় ধৈর্য ধরে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

 

তথ্যসূত্র ও ছবি : আজতক

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy