
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে আমেরিকার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ইউক্রেন। মঙ্গলবার সৌদি আরবের জেদ্দায় ‘রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনা’ নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশসচিব মার্কো রুবিও ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তবে এই বৈঠকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ইউক্রেন। এছাড়া যুদ্ধের অবসানের জন্য আলোচনা শুরু করতেও সম্মত হয়েছে কিয়েভ।
বৈঠক শেষে মার্কো রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এখন বল রাশিয়ার কোর্টে।’’ তিনি জানান, মস্কোর কাছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হবে। রুবিও আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, পুতিন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘‘ইউক্রেন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এবার রাশিয়ার পালা। আশা করি, পুতিনও এতে সম্মত হবেন। এই যুদ্ধে দুই দেশে বহু মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আমরা এই যুদ্ধের অবসান চাই।’’
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইউক্রেনের উপর দীর্ঘদিন ধরে চাপ সৃষ্টি করছিল যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন জেলেনস্কি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছিল তাদের মধ্যে। এরপর ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে মঙ্গলবারের বৈঠকে জেলেনস্কি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হওয়ায় ওয়াশিংটন ফের ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ব্রিটেনও। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘এটি ইউক্রেনের শান্তির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। রাশিয়াকে এখন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে এবং যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।’’
এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব রাশিয়া মানবে কি না, তা এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। গত কয়েক মাস ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বিশ্বজুড়ে এই যুদ্ধের প্রভাবে অর্থনৈতিক সংকটও তীব্র হয়েছে। ইউক্রেনের এই সিদ্ধান্তকে যুদ্ধবিরতির দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।
এখন শুধু রাশিয়ার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিশ্ব। পুতিন যদি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হন, তাহলে এই যুদ্ধের অবসানের পথে একটি বড় অগ্রগতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।