যশোর রোড সম্প্রসারণ ‘বিশ বাঁও জলে’, পরিবেশ বিদরা কিছুটা ‘চিন্তামুক্ত’ !

উত্তর ২৪ পরগনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা যশোর রোড। এই রাস্তাটি বনগাঁ, হাবড়া, বারাসত থেকে কলকাতার শ্যামবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত। রাস্তাটি প্রায় ১২৫ কিলোমিটার লম্বা এবং অত্যন্ত ব্যস্ত একটি সড়ক।

প্রতিদিন লাখো মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। উল্লেখ্য, উত্তর ২৪ পরগনায় বনাগাঁয় অবস্থিত পেট্রাপোল। ফলে নিত্য যাতায়াত করে পণ্যবাহী ট্রাকও। কিন্তু, রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ার কারণে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে যাত্রী ও ট্রাকচালকদের।

যশোর রোড সম্প্রসারণের জন্য ২০১৮ সালে পূর্ত দফতর একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এই পরিকল্পনা অনুসারে, বারাসত থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারের জন্য চার হাজার ৩৬টি গাছ কাটতে হতে পারে। কিন্তু, রাস্তা সংস্কারের জন্য এত গাছ কাটা হলে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, এই দাবিকে সামনে রেখে প্রতিবাদ করে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

শুধু পথে নেমে প্রতিবাদ নয়, গাছগুলির প্রাণ বাঁচানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সংগঠন আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিল। এরপর সেই মামলা চলে আদালতে এবং ২০১৮ সালে গাছ কাটার উপর স্থগিতাদেশ দেয় কোর্ট। আর এই কারণে বন্ধ থাকে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ।

এরপর অবশ্য উচ্চতর আদালতে গড়ায় মামলা এবং যশোর রোড সম্প্রসারণ ও গাছ কাটার প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে সর্বোচ্চ আদালত শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেয়। ৩০৫টি পুরনো গাছ কাটার বদলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে ১৫০০ গাছ নতুন করে বসাতে হবে, দেওয়া হয় এই নির্দেশও।

এদিকে ফুটপাথ দখল করে থাকা অস্থায়ী দোকানগুলি নিয়েও সমস্যা তৈরি হয়। অধিকাংশ দোকানদারই জায়গা ছাড়তে রাজি হননি। ফলে তাঁদের নির্দিষ্ট জায়গা থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ করা অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে কর্তৃপক্ষের জন্য।

এই দুই কারণেই যশোর রোড সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। অবিলম্বে যাতে তা শেষ হয়, এমনটাই দাবি জানাচ্ছেন নিত্য যাত্রীরা।

চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপায়

যশোর রোড সম্প্রসারণ প্রকল্পের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হওয়ার পেছনে দুটি প্রধান কারণ রয়েছে। প্রথমত, গাছ কাটার বিষয়ে পরিবেশবাদীদের আপত্তি। দ্বিতীয়ত, ফুটপাথ দখল করে থাকা অস্থায়ী দোকানগুলি সরানোর সমস্যা।

এই দুই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে:

গাছ কাটার বিষয়ে পরিবেশবাদীদের আপত্তি প্রশমিত করার জন্য, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে গাছ কাটার পরিবর্তে অন্যান্য বিকল্পগুলি বিবেচনা করতে হবে। যেমন, রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় স্থানের জন্য নির্দিষ্ট কিছু গাছকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা যেতে পারে।
ফুটপাথ দখল করে থাকা অস্থায়ী দোকানগুলি সরানোর জন্য, স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। দোকানদারদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা যেতে পারে। যদি আলোচনা ব্যর্থ হয়, তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
এই পদক্ষেপগুলি গ্রহণের মাধ্যমে যশোর রোড সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজকে দ্রুত এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy