
উত্তরাখণ্ডে ভারী বর্ষণের জেরে চারধাম যাত্রায় নেমে এসেছে ভয়াবহ বিপর্যয়। যমুনোত্রী ও বদ্রীনাথের একাধিক স্থানে প্রবল ভূমিধসে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন তীর্থযাত্রী, নিখোঁজ রয়েছেন আরও একজন। অসংখ্য মানুষ আটকে পড়েছেন বিভিন্ন স্থানে, যার ফলে চারধাম যাত্রা সম্পূর্ণরূপে ব্যাহত হয়েছে। খবর পেয়েই রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (SDRF, NDRF) এবং স্থানীয় পুলিশ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু করেছে।
সোমবার ২৩ জুন বিকেলে যমুনোত্রী মন্দিরের প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নৌ কাঁচি এলাকায় এক বিশাল ভূমিধস নামে। পাহাড় থেকে বড় বড় পাথর এবং বোল্ডার গড়িয়ে তীর্থযাত্রীদের চলার পথে এসে পড়ে, যা এক ভয়াবহ দৃশ্যের অবতারণা করে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বেশ কয়েকজন তীর্থযাত্রী পাথরের নিচে আটকে পড়েছেন।
ইতিমধ্যেই ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মুম্বাইয়ের এক আহত তীর্থযাত্রীকে উদ্ধার করে জানকিচট্টির প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। তবে দিল্লির ১২ বছর বয়সী ভাবিকা নামের এক শিশুসহ দুজন নিখোঁজ ছিলেন। তাদের মধ্যে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, বাকিদের খোঁজ চলছে।
সোমবার সকালে চামোলি জেলায় বদ্রীনাথ হাইওয়ের পাতালগঙ্গা টানেলের কাছে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। একটি চলন্ত গাড়ির ওপর পাথর পড়ে ঘটনাস্থলেই এক মহিলার মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হয় এক শিশুসহ আরও দু’জন। মৃতার নাম শিল্পা (৩৬)। আহতরা হলেন অঙ্কিত লাল (৩৯) এবং খুশী (১০)। তাঁরা প্রত্যেকেই হরিয়ানার ফতেহাবাদের বাসিন্দা এবং বদ্রীনাথ থেকে ফিরছিলেন।
এছাড়াও, ভূমিধসের কারণে গতকাল সকালে পিপলকোটির কাছে বদ্রীনাথ জাতীয় সড়ক (NH-54) ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল। যদিও দুপুরের মধ্যে রাস্তা পরিষ্কার করে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে, তবে গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই হাইওয়েতে দু’বার রাস্তা বন্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
উত্তরাখণ্ডে বর্তমানে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন তীর্থযাত্রীদের জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করেছে। একই সাথে, বন্ধ থাকা রাস্তাগুলো দ্রুত পরিষ্কার করে যান চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। তবে আবহাওয়ার প্রতিকূলতার কারণে উদ্ধারকাজ এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করাটা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিপর্যয় চারধাম যাত্রার নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।