
মহারাষ্ট্রের পালগড়ে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে, যা দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং জরুরি ব্যবস্থার চরম গাফিলতিকে আবারও সামনে এনেছে। অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে গর্ভবতী এক তরুণীর গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে, এবং এরপর সন্তানের মৃতদেহ ব্যাগে ভরে ৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দাহ করতে বাধ্য হয়েছেন বাবা। এই ঘটনা ঘিরে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পালগড়ের মোখাদা গ্রামে। গ্রামের বাসিন্দা অভিতা ও শখরাম দম্পতির জীবনে নেমে এসেছে এই ঘোর অন্ধকার। শখরাম জানিয়েছেন, গত ১০ই জুন হঠাৎ অভিতার পেটে তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়। তিনি বারবার ১০৮ নম্বরে ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকেন, কিন্তু কোনও অ্যাম্বুল্যান্স পাননি। অবশেষে নিরুপায় হয়ে একটি গাড়ি ভাড়া করে স্ত্রীকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান।
সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অভিতার স্বাস্থ্যের আরও অবনতি হয়। এক ঘণ্টা পর চিকিৎসকরা তাকে মোখাদা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেন। আবারও অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য খবর দেওয়া হয়। কিন্তু এবারও অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছতে প্রায় দু’ ঘণ্টা দেরি করে। ততক্ষণে অভিতার গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়।
অভিতার স্বাস্থ্যের আরও অবনতি হলে তাকে নাসিক সিভিল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়, যেখানে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু এখানেই শেষ নয় মর্মান্তিক ঘটনা। সন্তানের মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও অ্যাম্বুল্যান্স না পাওয়ায় শখরামকে এক চরম সিদ্ধান্ত নিতে হয়। মৃত শিশুকে একটি ব্যাগে ভরে ৮০ কিলোমিটার পথ বাসে চেপেই তিনি বাড়ি ফেরেন। গ্রামে পৌঁছে নিরুপায় হয়ে নিজের হাতেই দাহ করেন সদ্যপ্রয়াত সন্তানকে।
শখরামের অভিযোগ, এই ঘটনার পর তিনি যখন বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে যান, তখন পুলিশও তাকে হেনস্থা করে। স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং পুলিশ প্রশাসনের এমন চরম উদাসীনতা ও অমানবিকতার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এই ঘটনা ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং জরুরি পরিষেবা ব্যবস্থার দুর্বল দিকটি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। সরকার কি এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেবে, সেটাই এখন দেখার।