
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের পরপরই এবার পশ্চিমবঙ্গের ২৬ বিধানসভা নির্বাচনের রণনীতি সাজাতে রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় পৌঁছবেন তিনি এবং প্রায় ২০ ঘণ্টা রাজ্যেই থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী যেখানে উত্তরবঙ্গ থেকে নির্বাচনী যুদ্ধের রাজনৈতিক সুর বেঁধে দিয়েছেন, সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দক্ষিণবঙ্গে এসে সাংগঠনিক বার্তা দেবেন। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দলের দুই শীর্ষ নেতার বাংলায় আগমন স্বাভাবিকভাবেই গেরুয়া শিবিরের মনোবল দ্বিগুণ করে দিয়েছে।
জানা গেছে, শনিবার রাতে কলকাতায় পৌঁছে অমিত শাহ নিউটাউনের একটি হোটেলে উঠবেন। সেখানেই দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবার সকালে তিনি প্রথমে রাজারহাটের একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এরপর তাঁর গন্তব্য নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, যেখানে তিনি এক বিশাল সাংগঠনিক সভায় বক্তব্য রাখবেন। এই সভা থেকে তিনি মণ্ডল স্তর পর্যন্ত সমস্ত নেতাদের নিয়ে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের রণনীতি ঠিক করে দিতে পারেন। এছাড়াও, তিনি সিমলা স্ট্রিটে স্বামী বিবেকানন্দের বাসভবনে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারেন। রবিবার বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটের ফ্লাইটে তাঁর দিল্লি ফেরার কথা।
আসন্ন নির্বাচনের জন্য BJP মূলত তিনটি বিষয়কে সামনে রেখে তাদের প্রচারের সুর বেঁধেছে:
১. ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ভারতীয় সেনার সাফল্য: দেশপ্রেমের আবেগকে কাজে লাগিয়ে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে ভারতীয় সেনার সাফল্যকে তুলে ধরা হচ্ছে।
২. শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ও চাকরিহারাদের যন্ত্রণা: তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি এবং ২৬ হাজার চাকরি হারানোর যন্ত্রণাকে হাতিয়ার করে জনমত নিজেদের পক্ষে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
৩. তোষণের রাজনীতি: তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘তোষণের রাজনীতি’-র অভিযোগ তুলে হিন্দু ভোটকে এককাট্টা করার উপর জোরদার প্রচার চালানো হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও আলিপুরদুয়ারের ৩২ মিনিটের বক্তৃতায় এই তিনটি বিষয়ের উপরই গুরুত্ব দিয়েছেন। এবার অমিত শাহও একই সুরে সুর মেলাতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, তিনি বাংলার BJP-র সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী এবং সুকান্ত মজুমদার সহ রাজ্য নেতৃত্বকে কড়া নির্দেশিকা দিতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রীর আলিপুরদুয়ারের সভায় দিলীপ ঘোষের অনুপস্থিতি রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট আলোচনা সৃষ্টি করেছিল। এবার অমিত শাহের সাংগঠনিক সভায় তাঁর উপস্থিতি নিয়েও রাজনৈতিক মহলের কড়া নজর থাকবে। পাশাপাশি, রাজ্য BJP-র নতুন সভাপতি নির্বাচন নিয়েও শাহের এই সফরে বিস্তর আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে, অমিত শাহের এই সফর বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।