“মেড ইন চায়না, বেশিদিন যায় না”- এই দুই চিনা মাল কিনেই ডুবল পাকিস্তান বাহিনী

ভারতের সফল ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আকস্মিকতায় চরম ভয় এবং বিভ্রান্তিতে ভুগছে পাকিস্তান। এই দিশেহারা অবস্থা থেকেই তারা ভারতের উপর পাল্টা আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করছে বলে খবর। গত রাতে (৭-৮ মে) পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের বিভিন্ন স্থানে ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালানোর একাধিক প্রচেষ্টা চালানো হয়, কিন্তু ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর কড়া নজরদারি এবং অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষার সামনে এই সমস্ত আক্রমণ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।

এই ব্যর্থ হামলার একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো, পাকিস্তান যখন ভারতের উপর আক্রমণের চেষ্টা করছিল, তখন তারা মূলত চিনা সামরিক সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তির উপর নির্ভর করেছিল। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে নামার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই চিনা পণ্যের অসারতা প্রমাণিত হয়। পাকিস্তানের গর্বের সেই অস্ত্রগুলো ভারতের হাতে সহজেই ধ্বংস হয়ে যায়।

পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে চিনের কিছু সামরিক অস্ত্রের উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল এবং গর্বিত ছিল। তারা ভেবেছিল এই অস্ত্রগুলি ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে। কিন্তু ভারতের সামরিক শক্তির সামনে সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন চিনা অস্ত্রের সাহায্যে পাকিস্তান যুদ্ধ করার কথা ভেবেছিল এবং সেগুলো কীভাবে ভারতের হাতে ধ্বংস হয়েছে।

১. চিনা যুদ্ধবিমান JF-17: ভারতের উন্নত জেটের সামনে ব্যর্থ

ভারতীয় সেনাবাহিনী সাম্প্রতিক সংঘাতে পাকিস্তানের দুটি জেএফ-১৭ এবং একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। জেএফ-১৭ হলো পাকিস্তানের সামরিক অস্ত্রাগারের সেইসব চিনা অস্ত্রের মধ্যে অন্যতম যা পাকিস্তান তার সামরিক শক্তিবৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে চিনের প্রতিরক্ষা অংশীদার। চিনের সহযোগিতায় পাকিস্তান এই যুদ্ধবিমান তৈরি করেছে এবং সম্প্রতি তারা এগুলিকে তাদের বহরে যুক্ত করেছে। পাকিস্তান এটিকে ভারতের এলসিএ তেজসের সঙ্গে তুলনা করলেও, ভারতের উন্নত যুদ্ধবিমানের সামনে এর প্রযুক্তি অনেক দুর্বল। জেএফ-১৭ থান্ডার ব্লক ৩-এর মতো নতুন সংস্করণে চিনের জে-২০ যুদ্ধবিমানের কিছু স্টিলথ প্রযুক্তি যুক্ত করা এবং এটিকে হালকা করার চেষ্টা করা হলেও, তা ভারতের অত্যাধুনিক বিমানের সমকক্ষ হতে পারেনি।

ভারতের কাছে বর্তমানে রাফাল, সুখোই ৩০এমকেআই (Su-30MKI), মিরাজ ২০০০ (Mirage-2000) এবং তেজসের (Tejas) মতো অত্যন্ত উন্নত এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ব্যবস্থায় সজ্জিত যুদ্ধবিমান রয়েছে। সংখ্যাগত দিক থেকেও ভারত এগিয়ে। পাকিস্তানের কাছে ৪০০টির বেশি জেট রয়েছে, যার মধ্যে জেএফ-১৭, জে-১০সি এবং এফ-১৬ অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে, ভারতের কাছে ৫০০টিরও বেশি উন্নত যুদ্ধবিমান রয়েছে।

২. চিনা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম HQ-9: লাহোরের রক্ষা কবচ হলো ধ্বংস

জেএফ-১৭ ছাড়াও, চিনের তৈরি HQ-9 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ছিল পাকিস্তানের আরেকটি বড় ব্যর্থতা। ৭-৮ মে রাতে পাকিস্তানের ড্রোন হামলার জবাব দিতে গিয়ে ভারত তাদের এয়ার ডিফেন্স ইউনিটগুলো লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায় এবং সেগুলো ধ্বংস করে দেয়। পাকিস্তান তাদের গুরুত্বপূর্ণ শহর লাহোরকে রক্ষা করার জন্য চিনের সরবরাহ করা HQ-9 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করত, যা সম্ভবত পাকিস্তানকে দেওয়া সংস্করণে HQ-9P নামে পরিচিত।

HQ-9 হলো একটি দূরপাল্লার ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা চায়না প্রিসিশন মেশিনারি ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (CPMIEC) দ্বারা তৈরি। ভারতের রাফাল, সুখোই এবং ব্রহ্মসের মতো ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলার জন্য পাকিস্তান ২০২১ সালে এটিকে তাদের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। এর পাল্লা ১২৫ থেকে ২০০ কিলোমিটার এবং এটি একসঙ্গে ১০০টি লক্ষ্যবস্তুকে ট্র্যাক করার ক্ষমতা রাখে বলে দাবি করা হয়েছিল। তবে, বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে এর কথিত গুণাবলী ভারতের বিরুদ্ধে কার্যকর হয়নি। চিনা পণ্যের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতার জন্য পাকিস্তানকে এই ব্যর্থতার চড়া মূল্য চোকাতে হয়েছে এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ধ্বংস হয়ে গেছে।

সামগ্রিকভাবে, অপারেশন সিঁদুরের পর পাকিস্তানের ভয় ও বিভ্রান্তি থেকে উদ্ভূত আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ তাদের জন্যই ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে। চিনা অস্ত্রের উপর নির্ভর করে তারা যে পাল্টা আঘাত হানার চেষ্টা করেছিল, তা ভারতের সুসংহত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং উন্নত সামরিক প্রযুক্তির সামনে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল যে যুদ্ধক্ষেত্রে শেষ কথা বলে নিজস্ব ক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব এবং সৈনিকের দক্ষতা, নিছক আমদানি করা অস্ত্রের উপর নির্ভরতা নয়।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy