
মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে ‘অশালীন মন্তব্য’ করার অভিযোগে গুরগাঁওয়ের আইনের ছাত্রী শর্মিষ্ঠা পানোলিকে গ্রেফতার করে কলকাতায় এনেছে কলকাতা পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে প্রায় দশ বছর আগে অভিনেত্রী ও বর্তমান তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষের (Sayani Ghosh) এবং তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের (Mahua Moitra) বিতর্কিত মন্তব্যগুলো।
সায়নী ঘোষের পুরোনো বিতর্ক ও পুলিশের ভূমিকা:
সায়নী ঘোষ যখন কেবলমাত্র একজন অভিনেত্রী ছিলেন, তখন তিনি শিবলিঙ্গে কন্ডোম পরানোর একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন। সেই সময় তৎকালীন বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথাগত রায় (Tathagata Roy) এই নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও, সায়নীকে গ্রেফতার তো দূরের কথা, জিজ্ঞাসাবাদের জন্যও তলব করা হয়নি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তখন সায়নীর গায়ে রাজনৈতিক রং না লাগলেও এবং তৃণমূল বিরোধী মনোভাব থাকলেও পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
মহুয়া মৈত্রের মন্তব্য ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা:
একইভাবে, তৃণমূল সাংসদ থাকাকালীন মহুয়া মৈত্র মা কালীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। সেই ঘটনাতেও রাজ্য পুলিশ তাঁকে তলব পর্যন্ত করেনি। এই প্রেক্ষিতে ২২ বছর বয়সী আইন কলেজের ছাত্রী শর্মিষ্ঠা পানোলির দ্রুত গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুনেতে পাঠরত ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে গার্ডেনরিচ থানায় অভিযোগ দায়ের হতেই কলকাতা পুলিশ ভিনরাজ্যে গিয়ে তাকে গ্রেফতার করেছে। শাসক দলও পুলিশের এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ: পুলিশের ‘অতিসক্রিয়তা’ ও বৈষম্য:
এই প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল (Agnimitra Paul) কলকাতা পুলিশের ‘অতিসক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “একটা পোস্ট যেটা নিয়ে এত বিতর্ক হল, সেই পোস্ট মেয়েটি ডিলিট করল, এবং একাধিকবার ক্ষমাও চাইল। কিন্তু একটা ধর্মের মানুষের বিরুদ্ধে কিছু বললেই কলকাতা পুলিশের অতিসক্রিয়তা দেখা যায়।”
অগ্নিমিত্রা পাল আরও বলেন, “কিন্তু অন্যদিকে সায়নী ঘোষ যখন শিবলিঙ্গের ওপর কন্ডোম পরায় তখন পুলিশ কোথায় থাকে? মহুয়া মৈত্র যখন মা কালীকে অসভ্য ভাষা বলেন তখন পুলিশ কোথায় থাকে? এদের তো তখন গ্রেফতার করা হয় না।”
এই গ্রেফতারি এবং পুরোনো বিতর্কের সূত্র ধরে রাজ্য পুলিশের নিরপেক্ষতা এবং নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকার বৈষম্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনা চলছে।