মুর্শিদাবাদে মুঙ্গেরের অস্ত্রের রমরমা, ২৪ ঘণ্টায় ৯ পিস্তল, ১৬ ম্যাগাজিন ও ৪৫ কার্তুজ উদ্ধার, গ্রেফতার ৬

মুর্শিদাবাদ জেলায় মুঙ্গের-নির্মিত আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজের ব্যাপক অনুপ্রবেশে উদ্বিগ্ন জেলা পুলিশ। গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ, স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (SOG) এবং দুটি থানার পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ৯টি পিস্তল, ১৬টি ম্যাগাজিন এবং ৪৫ রাউন্ড কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করেছে। এই ঘটনায় মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ধৃতদের মধ্যে একজন মালদার বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা। বাকি পাঁচজন মুর্শিদাবাদ জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের জলঙ্গি, রানিনগর ও সাগরপাড়া এলাকার বাসিন্দা। রবিবার বহরমপুর থানায় আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা পুলিশের ডিএসপি, ডিএনটি সুশান্ত কুমার রাজবংশী জানান, এসওজি, বহরমপুর থানা এবং সাগরপাড়া থানার পুলিশ দুটি পৃথক যৌথ অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রসহ এই ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের আদালতে তুলে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বিস্তারিত তদন্তের জন্য।

বিশাল অস্ত্র উদ্ধার অভিযান:

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ১১টা নাগাদ স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও সাগরপাড়া থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে সাগরপাড়া থানার চারাবটতলা এলাকায় দুটি মোটরবাইক আটক করে। তল্লাশি চালিয়ে ৩টি ৭.২ এমএম পিস্তল, একটি কান্ট্রি মেড পিস্তল, ৬টি ম্যাগাজিন এবং ১৫ রাউন্ড কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে গিয়াসুদ্দিন শেখ, মিজারুল শেখ, মুকলেশ্বর মণ্ডল ও মারুফ শেখ নামে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

এই ঘটনার মাত্র ১১ ঘণ্টা পর এসওজি এবং বহরমপুর থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে বহরমপুর থানার ফরাসডাঙা থেকে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম আবু হেনা ও সরিফুল শেখ। আবু হেনা মালদার বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা। এদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৫টি ৭.৬৫ বোরের পিস্তল, ১০টি খালি ম্যাগাজিন এবং ৩০ রাউন্ড কার্তুজ।

পাচারের উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ:

পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে যে, বাজেয়াপ্ত হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ এবং ম্যাগাজিনগুলি বিহারের মুঙ্গেরে তৈরি। জঙ্গিপুর করিডোর দিয়ে সেগুলি এই জেলায় প্রবেশ করেছিল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আগ্নেয়াস্ত্রগুলি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল। পুলিশ এখন খতিয়ে দেখছে, এগুলো বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল কিনা।

পুলিশ সূত্রে আরও খবর, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত জেলায় মোট ৯১টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৩১৯টি কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেলায় অস্ত্রের অবাধ প্রবেশ নিয়ে পুলিশ মহলে উদ্বেগ বাড়ছে, এবং এর উৎস ও পাচার চক্রের মূলে পৌঁছতে তদন্ত জোরদার করা হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy