
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিন সংক্রান্ত বাণিজ্য নীতি এবং ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যানকে নিয়ে তাঁর অবস্থানে পরিবর্তন আসতেই আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামে বড়সড় প্রভাব পড়েছে। গত দু’দিনে একলপ্তে হলুদ ধাতুর দাম প্রায় ৩৮০০ টাকা কমে গেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই দর পতনের পেছনে মূল কারণ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি শিথিলতার ইঙ্গিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এর আগে চিন থেকে পণ্য আমদানির উপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন বাণিজ্য যুদ্ধের তীব্রতা বাড়িয়েছিল, তখন বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে সোনাকে সুরক্ষিত লগ্নি হিসেবে গণ্য করে বিনিয়োগকারীরা সোনার দিকে ঝুঁকেছিলেন, যার ফলে সোনার দাম বাড়ছিল। গত কয়েকদিন সোনার দাম বিপুল পরিমাণ বেড়ে মঙ্গলবার ১ লক্ষ টাকার সীমাও অতিক্রম করেছিল।
এরপর বুধবার এক ধাক্কায় সোনালি ধাতুর দামে বড় পতন ঘটে। সাধারণ মানুষ আশা করেছিলেন যে বৃহস্পতিবারও এই পতন অব্যাহত থাকবে। কিন্তু এদিন দাম কমার বদলে সামান্য বেড়েছে। মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে (MCX) আজ ১০ গ্রাম সোনার দাম সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬,১৮৮ টাকায়। অন্যদিকে, রুপোর দাম প্রতি কেজিতে ৯৭.৭৫ টাকা কমেছে এবং বর্তমানে ১ কেজি রুপোর দাম ৯৬,৯০০ টাকা। উল্লেখ্য, সোনা বা রুপো কেনার সময় উপরে দেওয়া দামের সঙ্গে অতিরিক্ত ৩ শতাংশ জিএসটি যুক্ত হবে। কলকাতায় আজ ২৪ ক্যারাট খুচরো সোনার ১০ গ্রামের দাম ৯৬,৪৫০ টাকা এবং ২২ ক্যারেট সোনার দাম ৯১,৬৫০ টাকা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিনের সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধে ইতি টানার ইঙ্গিত দিয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি জানান যে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক অনেক বেশি এবং এটি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো হবে। অন্যদিকে, ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার না কমানোর জন্য ট্রাম্প একসময় ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সেই অবস্থান থেকেও সরে এসেছেন। এই দুটি ঘটনাই বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা কিছুটা কমিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, যার ফলে সোনার মতো সুরক্ষিত সম্পদের চাহিদা কমেছে এবং দাম ধীরে ধীরে কমছে। যদিও আজকের সামান্য বৃদ্ধি আবার নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।