
আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার কেদারনাথে এক ভয়াবহ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পাইলট-সহ ৭ জন তীর্থযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। রবিবার ভোর ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ শ্রী কেদারনাথ ধাম থেকে গুপ্তকাশী যাওয়ার পথে গৌরিকুণ্ডের আশেপাশে এই দুর্ঘটনা ঘটে। উত্তরাখণ্ড সিভিল অ্যাভিয়েশন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এই খবর নিশ্চিত করেছে। দুর্ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF) ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (SDRF)।
রুদ্রপ্রয়াগ জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা নন্দন সিং রাজওয়ার জানিয়েছেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণে দৃশ্যমানতা কম ছিল, যার জেরেই গৌরীকুণ্ডের জঙ্গলের উপরে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়োয়াল রেঞ্জের ইন্সপেক্টর জেনারেল রাজীব স্বরূপ জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাস্থলটি অত্যন্ত প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় উদ্ধারকাজে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। সূত্রের খবর, আরিয়ান অ্যাভিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেডের হেলিকপ্টারটি কেদারঘাটির গৌরীকুণ্ড ও ত্রিযুগীনারায়ণের মাঝে ভেঙে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
দুর্ঘটনায় মৃত ৭ জন যাত্রীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন: মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা রাজকুমার সুরেশ জয়সওয়াল (৪১), শ্রদ্ধা রাজকুমার জয়সওয়াল (৩৫), কাশী (২৩ মাস), বিক্রম (৪৬); উত্তরপ্রদেশের বিজনোরের বাসিন্দা বিনোদ দেব (৬৬) ও তুষ্টি সিং (২৯)। এছাড়াও, হেলিকপ্টারের পাইলট ক্যাপ্টেন রাজবীর সিং চৌহানও এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
রুদ্রপ্রয়াগে হেলিকপ্টার পরিষেবার নোডাল অফিসার তথা জেলা পর্যটন আধিকারিক রাহুল চৌবে জানান, “আজ সকালে আমরা হেলিকপ্টার নিখোঁজ হওয়ার খবর পাই। হেলিকপ্টারটির খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। আরিয়ান অ্যাভিয়েশনের মালিকানাধীন বিমানটি কেদারনাথ ধাম থেকে গুপ্তকাশীতে তার ঘাঁটিতে ফেরার সময় উপত্যকায় হঠাৎ প্রতিকূল আবহাওয়ার মুখোমুখি হয়। পাইলট হেলিকপ্টারটিকে উপত্যকার বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেই চেষ্টার সময় হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।” তিনি আরও জানান, গৌরীকুণ্ডের কাছে ধোঁয়া উড়তে দেখে তারা নিশ্চিত হন যে এটি সেই নিখোঁজ হেলিকপ্টারটি, যার সিগন্যাল তারা হারিয়েছিলেন।
৪০ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে চারধাম রুটে এটি পঞ্চম হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা। একের পর এক এই ধরনের ঘটনা তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা এবং এই রুটে হেলিকপ্টার পরিষেবাগুলির সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।