
পশ্চিম এশিয়ায় ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলা উত্তেজনার জেরে আন্তর্জাতিক আকাশপথে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে, যার ফলস্বরূপ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও তার যাত্রাপথে রদবদল করতে হয়েছে। জি-সেভেন বৈঠকে কানাডা যাওয়ার পথে তাকে ঘুরপথে যেতে হচ্ছে। জানা গিয়েছে, গোটা অঞ্চলজুড়ে একাধিক দেশ আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় নির্দিষ্ট রুটে উড়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না, ফলে মোদির বিশেষ বিমান ‘এয়ার ইন্ডিয়া ওয়ান’-কে ঘুরপথে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে।
ত্রিদেশীয় সফরে বেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রথমে সাইপ্রাস এবং ক্রোয়েশিয়া সফর করবেন, এরপর যাবেন কানাডায় জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে। রবিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ তিনি দিল্লি থেকে রওনা দিয়েছেন এবং বিকেল তিনটে নাগাদ সাইপ্রাসের লারনাকা শহরে পৌঁছানোর কথা।
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে মোদির বিমান পাকিস্তান, ইরান, ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও ইজরায়েলের আকাশসীমা পেরিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ইজরায়েল-ইরান সংঘাতের ফলে ওই সমস্ত আকাশপথ বর্তমানে হয় বন্ধ, নয়তো বিপজ্জনক বলে বিবেচিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত চলা ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর থেকেই ভারতীয় বিমানগুলি পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারছে না। সূত্রের খবর, এই নিষেধাজ্ঞা প্রধানমন্ত্রী মোদির বিশেষ বিমানেও কার্যকর। বিকল্প হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, সৌদি আরব এবং জর্ডনের ওপর দিয়ে যাওয়ার একটি রুট ভাবা হলেও, ওই অঞ্চলেও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা থাকায় সেই রুটও এখনও নিশ্চিত নয়। ফলে দিল্লি থেকে লারনাকা পৌঁছনোর পথে, যা সাধারণত ৮-৯ ঘণ্টা সময় নেয়, এবার সেই সময় অনেকটাই বেড়ে যাবে।
সাইপ্রাসে ২৪ ঘণ্টার যাত্রাবিরতির পর প্রধানমন্ত্রী রওনা দেবেন কানাডার উদ্দেশ্যে, যেখানে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে সেই আকাশপথও এড়িয়ে যেতে হবে। ১৩ই জুন ইজরায়েলের ইরানে বিমান হামলার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের আকাশসীমা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। একাধিক দেশ বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার উদ্দেশ্যে ভারতের বিমান সংস্থাগুলির যাতায়াত অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যেই এয়ার ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিগো-সহ একাধিক ভারতীয় সংস্থা আন্তর্জাতিক রুটে এক ডজনেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে।
এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলে এক নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে এবং বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব কতটা ব্যাপক হতে পারে, তা আবারও প্রমাণ করছে।