
বিমানের সমস্যা যেন থামছেই না। আহমেদাবাদের সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার পর থেকে ভারতের আকাশপথে একের পর এক যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিচ্ছে, যা যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করেছে। বহু ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে এবং মাঝ আকাশেও বিপত্তি থামছে না। বৃহস্পতিবার একই দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক বিমান যান্ত্রিক সমস্যার মুখে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লী থেকে লেহগামী ইন্ডিগোর 6E 2006 বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয়। ১৮০ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্য নিয়ে বিমানটি লেহ-র উদ্দেশে রওনা দিলেও, সমস্যা দেখা দেওয়ায় দ্রুত দিল্লিতে ফিরিয়ে এনে জরুরি অবতরণ করানো হয়। প্রাথমিকভাবে কোনো যাত্রী আহত না হলেও, ইন্ডিগোর তরফে ত্রুটির কারণ এখনো জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, স্পাইসজেটের হায়দ্রাবাদ থেকে তিরুপতিগামী বিমানেও যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা যায়। বিমান টেক অফের মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই সমস্যা শুরু হওয়ায় সুরক্ষাজনিত কারণে এটি ঘুরিয়ে হায়দ্রাবাদেই জরুরি অবতরণ করানো হয়। ওই বিমানে ৮০ জন যাত্রী ছিলেন।
কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও একই দিনে দুটি বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা গেছে, যার কারণে সময়মতো উড়তে পারেনি বিমানগুলি।
কলকাতা-শিলচর: বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা ৫৫ মিনিটে ১৫৫ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতা থেকে শিলচরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার জন্য ট্যাক্সিওয়ে থেকে রানওয়ের দিকে যাওয়ার পথে পাইলট যান্ত্রিক ত্রুটির কথা জানিয়ে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (ATC)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সঙ্গে সঙ্গেই বিমানটিকে ফের ট্যাক্সি বে ৪৮-এ পার্কিংয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর ত্রুটি মেরামত হলে বিমানটি অবশেষে শিলচরের উদ্দেশে রওনা দেয়।
কলকাতা-আগরতলা: একইভাবে, কলকাতা থেকে আগরতলাগামী ইন্ডিগো 6E6068 বিমানেও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায়। বিমানটি রানওয়েতে এগোনোর সময় পাইলট ATC-কে ত্রুটির কথা জানালে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর রানওয়ে থেকে বিমান ঘুরিয়ে বে-তে আনা হয়। পরে, এই বিমানটিও যাত্রীদের নিয়ে আগরতলার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনা এবং একের পর এক বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ার পর এয়ার ইন্ডিয়া তাদের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নিয়ে একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ২০শে জুন থেকে জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়া তাদের ১৫ শতাংশ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিমানের নিরাপত্তা এবং রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই ধারাবাহিক যান্ত্রিক ত্রুটি এবং ফ্লাইট বাতিলের ঘটনা দেশের বিমান পরিষেবা এবং যাত্রী সুরক্ষার বিষয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে ধরেছে, যা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।