
বিধানসভার ভিতরে প্রবেশের সময় বিধায়কদের গাড়ি তল্লাশি চালানোকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল রাজ্য রাজনীতি। বৃহস্পতিবার আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল পুলিশের সঙ্গে কার্যত বচসায় জড়িয়ে পড়েন এবং এই তল্লাশি প্রক্রিয়ার তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, মুখ্যমন্ত্রীর গাড়িও কি একইভাবে তল্লাশি করা হয়?
এদিন বিধানসভার গেটে নিজের গাড়িতে তল্লাশি চালানো হলে অগ্নিমিত্রা পাল কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীকে প্রশ্ন করেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি চেক করা হয়?” উত্তরে নিরাপত্তারক্ষী জানান, “আমার কাছে যা অর্ডার আছে আমি সেই অনুযায়ী করছি।” এরপর বিজেপি নেত্রী বলেন, “নিয়ম তো সকলের জন্য সমান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়িও কি পরীক্ষা করা হয়? কেউ তো আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আমার গাড়িতে তল্লাশি চালানো হলে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়িও চেক করা হবে। আমি আলাদা কোনও সুবিধা চাইছি না।”
শুধু তাই নয়, অগ্নিমিত্রা পাল তার গাড়িতে থাকা বিজেপির একটি উত্তরীয় দেখিয়ে বলেন, “এখানকার নিরাপত্তারক্ষী বলছেন এটা সরাতে হবে। কেন সরাবো? বড় বড় তৃণমূলের বিধায়কদের গাড়িতে লেখা থাকে ‘এগিয়ে বাংলা’। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও চিপকানো থাকে। সেই সময় তো বলছেন না গাড়ি ঢুকবে না। শুধু এই উত্তরীয় থাকলে বলছেন গাড়ি ঢুকবে না? প্রতিটি জিনিস থাকবে। কিছু সরানো হবে না।”
উল্লেখ্য, গত ১৩ই জুন থেকে বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের গাড়ি তল্লাশি শুরু হয়েছে। বিজেপির দাবি, তাদের প্রতিবাদ করার অধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্যই এই ধরনের কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, “তুলসী গাছ নিয়ে বিধানসভার ভিতরে যাতে কেউ না ঢুকতে পারে সেই কারণে কি এত তল্লাশি?”
তবে, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম দিনই এই তল্লাশির যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, “নিরাপত্তারক্ষীকে পরিষ্কার অনুমতি দেওয়া হয়েছে তল্লাশির জন্য। কে কী নিয়ে আসছেন তা তো আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়, যাঁরা গেটের দারোয়ান রয়েছেন তাঁরাই চেক করবেন। এটা নিরাপত্তার বিষয়। তাই আমরা চাই না এমন কিছু ঘটুক যাতে বিধানসভার কাজ ব্যাহত হয়।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিধানসভার নিরাপত্তা এবং বিধায়কদের অধিকারের বিষয়টি আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে।