মক টেস্টে হতাশাজনক ফল, বেধড়ক মার শিক্ষক বাবার! ১৭ বছরের কিশোরীর মৃত্যু বাবার হাতে

মাত্র ১৭ বছর বয়সেই থেমে গেল এক মেধাবী ছাত্রীর জীবন। মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলি জেলার নেলকারঞ্জি গ্রামের বাসিন্দা সাধনা ভোঁসলে দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় পেয়েছিলেন ৯২.৬০ শতাংশ নম্বর—যে ফল যে কোনও পড়ুয়ার কাছে গর্বের। তাঁর স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য দিনরাত বইয়ে মুখ গুঁজে পড়াশোনা করতেন সাধনা, ত্যাগ করেছিলেন খেলা, বিনোদন—সব কিছু। কিন্তু একটি ভুল পরীক্ষার ফল বদলে দিল তার ভবিষ্যৎ।

মক টেস্টে হতাশাজনক ফল, নির্মম বাবা
বর্তমানে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সাধনা প্রস্তুতি নিচ্ছিল ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা ‘নিট’-এর জন্য। চলতি বছরেই পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। কিন্তু টানা পরিশ্রমের পরও মক টেস্টে আশানুরূপ ফল করতে পারেননি তিনি। আর সেই ‘খারাপ ফল’ মেনে নিতে পারেননি তাঁর বাবা, পেশায় এক স্কুল শিক্ষক ধোঁদিরাম ভোঁসলে। রাগের বশে মেয়েকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন তিনি।

মারের চোটে গুরুতর আহত হয়ে পড়ে সাধনা। সঙ্গে সঙ্গে তাকে সাঙ্গলির উশাকল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই মৃত্যু হয়েছে তার। ময়নাতদন্তে জানা গেছে, মাথায় ও দেহে একাধিক আঘাতের ফলে অন্তর্বর্তী রক্তক্ষরণ হয়, যা তার মৃত্যুর কারণ।

পাল্টা ধোঁকা, সত্যি উন্মোচন
সাধনার মৃত্যুর পর ধোঁদিরাম দাবি করেন, তাঁর মেয়ে শৌচাগারে পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের রিপোর্ট ও ময়নাতদন্তের ফলাফল সেই দাবি খারিজ করে দেয়। স্পষ্ট হয়, মারের আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে কিশোরীর। পরবর্তীতে সাধনার মা পুলিশের কাছে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।

ধোঁদিরাম প্রথমে মেয়েকে মারধরের কথা অস্বীকার করলেও পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধ স্বীকার করেন। তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, ঘটনার পরের দিনও তিনি স্কুলে গিয়ে যোগ দিবস উদযাপনে অংশ নেন—যেন কিছুই হয়নি।

সমাজে বার্তা
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠে যায়, শুধুই ভালো ফলের জন্য সন্তানদের উপর মানসিক চাপ তৈরি কি আদৌ উচিত? একজন শিক্ষকের হাতে তাঁর নিজের সন্তান যদি এমন নির্মমতার শিকার হন, তাহলে বাকি সমাজের শিক্ষার মূল্য কী?

(বিঃদ্রঃ—এই প্রতিবেদনটি একটি দুঃখজনক বাস্তব ঘটনা ভিত্তিক। এটি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করা হয়েছে।)

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy