
সুরের জাদুতে দেশ-বিদেশের লাখো মানুষের মন জয় করেছেন মুর্শিদাবাদের ভূমিপুত্র, বিশ্বখ্যাত গায়ক অরিজিৎ সিং। তবে তাঁর পরিচিতি শুধু সঙ্গীত জগতেই সীমাবদ্ধ নয়, সামাজিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি এবার তাঁর পারিবারিক রেস্তোরাঁ ‘হেঁশেল’-ও সুখ্যাতি অর্জন করছে রাজ্য ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশে। অরিজিৎ সিংয়ের স্পর্শে ‘হেঁশেল’ এখন আর শুধু একটি খাবারের দোকান নয়, বরং একটি পরিচিতি, একটি অভিজ্ঞতা।
একদা বাংলার নবাবী সাম্রাজ্যের কেন্দ্রভূমি মুর্শিদাবাদ, যার ঐতিহাসিক গুরুত্ব আজও দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকর্ষণ করে। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক লালবাগের ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ দেখতে আসেন। তাদের অনেকেই এখন লালবাগ থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জিয়াগঞ্জে পা রাখেন অরিজিৎ সিংয়ের টানে। এই জিয়াগঞ্জেই অবস্থিত ‘হেঁশেল’, যা গায়কের পারিবারিক রেস্তোরাঁ।
সকাল এগারোটা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত দেশ-বিদেশের অতিথিদের আতিথেয়তা সামলান অরিজিৎ সিংয়ের বাবা সুরেন্দ্র সিং ওরফে কাক্কা সিং এবং হোটেলের ম্যানেজার রাজু। মাঝে মাঝে অরিজিৎ নিজেও শহরে থাকলে এই রেস্তোরাঁয় আসেন, যা অনেক অতিথির কাছেই এক বাড়তি পাওনা। অনেকেই প্রিয় গায়ককে এক ঝলক দেখার আশায় ‘হেঁশেল’-এ ভিড় জমান।
‘হেঁশেল’-এর খাবারের দাম একেবারেই পকেটসই, যা এর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ। বিশেষ করে, পড়ুয়াদের জন্য এখানে রয়েছে আকর্ষণীয় ছাড়। সোম থেকে শনিবার পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য ৩০ টাকার ভেজ থালি পরিবেশন করা হতো, যা বর্তমানে ৪০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এমনকি, পড়ুয়াদের জন্য পার্সেলেরও ব্যবস্থা রয়েছে। কলেজের পাশেই অবস্থিত হওয়ায় দুপুরে কলেজ পড়ুয়াদের ভিড় লেগেই থাকে। সন্ধ্যা নামতেই সাধারণ মানুষের ভিড় বাড়ে, যারা সস্তায় সুস্বাদু খাবারের টানে বারবার আসেন।
অরিজিৎ সিংয়ের নামে পরিচিতি পেলেও, ‘হেঁশেল’-এর প্রকৃত জনপ্রিয়তা এসেছে তার সুস্বাদু খাবার এবং পারিবারিক উষ্ণ আতিথেয়তার কারণে। যারা একবার এখানে খেতে আসেন, তারাই মুগ্ধ হয়ে ফিরে আসেন। অরিজিৎ সিং নিজে সব সময় উপস্থিত না থাকলেও, তাঁর পরিবারের তত্ত্বাবধানে ‘হেঁশেল’ আজ মুর্শিদাবাদের একটি অন্যতম পরিচিতি হয়ে উঠেছে, যা স্থানীয় এবং পর্যটক – সকলের কাছেই সমানভাবে প্রিয়। সুরের পাশাপাশি স্বাদের জাদুতেও অরিজিৎ সিংয়ের পরিবার যে একইভাবে সফল, তা ‘হেঁশেল’-এর ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তাই প্রমাণ করে।