ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের কারণে সাময়িক বিরতির পর আগামী ১৭ মে থেকে ফের মাঠে গড়াচ্ছে আইপিএল ২০২৫। ইতিমধ্যেই নতুন করে সূচি ঘোষণা করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। সংশোধিত সূচি অনুযায়ী, আইপিএলের বাকি ১৭টি ম্যাচ আয়োজিত হবে দেশের ৬টি ভিন্ন মাঠে। কিন্তু এই ভেন্যু তালিকায় নাম নেই কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের, যা নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
পূর্বের সূচি অনুযায়ী, ক্রিকেটের নন্দনকানন খ্যাত ইডেন গার্ডেন্সে একটি প্লে-অফ ম্যাচ এবং ফাইনাল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন ঘোষিত সূচিতে সরকারিভাবে এখনও ইডেনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
কেন ইডেনে হবে না আইপিএল ফাইনাল? কোন যুক্তিতে বাদ গেল ঐতিহ্যবাহী এই মাঠ? এই প্রশ্ন তুলে এদিন ইডেনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার, যেখানে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে লেখা ছিল – ক্রিকেট বোর্ড যেন ক্রিকেটের নন্দনকানন ইডেন গার্ডেন্স থেকে আইপিএল ফাইনাল সরিয়ে না নেয়। বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে আহমেদাবাদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও তোলা হয়।
সূত্র মারফত জানা গেছে, আইপিএল ফাইনালের নতুন নির্ধারিত তারিখ ৩ জুন কলকাতায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই কারণেই নাকি বিসিসিআই ইডেনে ফাইনাল আয়োজনে রাজি নয়। তবে এত আগে থেকে বৃষ্টির পূর্বাভাস কতটা সঠিক এবং তার ভিত্তিতে ফাইনালের ভেন্যু পরিবর্তন কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ক্রিকেট অনুরাগীরা।
এদিন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করেন ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের (সিএবি) সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি পুরো বিষয়টি বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে বলেন। স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, সিএবি কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই বোর্ডকে চিঠি দিয়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং মাঠের পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পাঠিয়েছে।
স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, “আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করে আমরা বোর্ডে পাঠিয়েছি। তবে এখনও বোর্ডের কাছ থেকে কোনো জবাব আসেনি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আইপিএল ফাইনাল তো আর প্রতি বছর হয় না। দশ বছর পর আমরা ফাইনাল আয়োজনের সুযোগ পেয়েছি। যদি বৃষ্টি হয়ও, ম্যাচ আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত পরিকাঠামো আমাদের (সিএবি-র) রয়েছে। আগামী ৩ জুন ইডেন সম্পূর্ণ প্রস্তুত আইপিএল ফাইনাল আয়োজন করার জন্য।”
উল্লেখ্য, এর আগে আহমেদাবাদে সিএসকে বনাম গুজরাত টাইটান্সের ফাইনাল বৃষ্টির কারণে যেভাবে বিঘ্নিত হয়েছিল এবং তার জেরে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল, তা সকলেরই জানা। সেখানে ইডেনের নিকাশী ব্যবস্থা ভারতের যেকোনো মাঠের তুলনায় অনেক উন্নত। তারপরও কীভাবে ইডেন থেকে ফাইনাল সরানো হতে পারে, তা নিয়ে সিএবি কর্তাদের অন্দরেও ক্ষোভ দেখা গেছে। শেষ পর্যন্ত সিএবি ফাইনালকে ইডেনে ফিরিয়ে আনতে পারে কিনা, সেদিকেই এখন অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীরা।
