ভারতে প্রথম কেরলে – প্রথম দু সপ্তাহ পড়ানো হবে না পাঠ্যপুস্তক! পরিবর্তে সামাজিক সচেতনতার পাঠ

দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এক অত্যন্ত অভিনব এবং তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেরল রাজ্য। ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষের প্রথম দুই সপ্তাহ কেরলের স্কুলগুলিতে পাঠ্যপুস্তক পড়ানো হবে না। পরিবর্তে, এই সময়টুকুতে শিক্ষার্থীরা কেবল বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয় সম্পর্কে আলোচনা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমে অংশ নেবে। রাজ্যের জনশিক্ষা বিভাগ এই ঘোষণা করেছে, যা ভারতে প্রথম এমন উদ্যোগ বলে দাবি করা হচ্ছে। এই অভিনব পদক্ষেপের লক্ষ্য হল পাঠ্যপুস্তকের বাইরের বাস্তব জগতের গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়গুলি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সংবেদনশীল ও শিক্ষিত করে তোলা।

শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা ও আলোচিত বিষয়সমূহ:

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ভি শিভানকুট্টি এই উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সচেতনতামূলক আলোচনাগুলো মাদকের অপব্যবহার রোধ, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস প্রতিরোধ, মানসিক নিয়ন্ত্রণ, হিংসাত্মক আচরণ নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশগত ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি, স্বাস্থ্যসেবা এবং আইন সচেতনতার মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর केंद्रित হবে। শিভানকুট্টি বলেন, “দুই সপ্তাহ ধরে, শিশুরা পাঠ্যপুস্তক পড়বে না, তবে আমরা বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতামূলক সেশন এবং আলোচনা করব।”

মন্ত্রী আরও জানান যে, এই গুরুত্বপূর্ণ সেশনগুলির জন্য নির্দেশিকাগুলি অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। পুলিশ, আবগারি, শিশু অধিকার কমিশন, সামাজিক ন্যায়বিচার, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন, নারী ও শিশু উন্নয়ন, কেরলের রাজ্য শিক্ষা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ পরিষদ (এসসিইআরটি) এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিভাগের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি দুই দিনের কর্মশালার আয়োজনের পরেই এই নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে।

শ্রেণীভিত্তিক সময়সূচী:

রাজ্যের স্কুলগুলিতে প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আগামী ২ জুন, ২০২৫ থেকে শুরু হওয়া প্রথম দুই সপ্তাহের আলোচনাসভায় অংশগ্রহণ করবে। অন্যদিকে, উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য আগামী ১৮ জুলাই, ২০২৫ থেকে এক সপ্তাহের জন্য একই ধরণের কর্মসূচি পালন করা হবে। স্কুলগুলি এই বিশেষ কর্মসূচির জন্য তাদের সময়সূচীও এমনভাবে তৈরি করেছে যাতে শিল্প, খেলাধুলা এবং সামাজিক সমস্যা শিক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সময় নিশ্চিত করা যায়।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে কেরল সরকার চাইছে ছাত্রছাত্রীদের কেবল পুঁথিগত বিদ্যায় শিক্ষিত না করে, তাদের আরও বেশি সংবেদনশীল, দায়িত্বশীল এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে। দেশের অন্যান্য রাজ্যের জন্য এটি একটি অনুসরণীয় মডেল হতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy