ভারতে চালু হচ্ছে স্টারলিঙ্কের ইন্টারনেট পরিষেবা! নিরাপত্তায় মাস্ককে ‘বড় নির্দেশ’ কেন্দ্রের?

ভারতে শীঘ্রই স্টারলিঙ্কের ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হতে যাচ্ছে। ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের এই স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা ভারতে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত। সম্প্রতি বাংলাদেশে স্টারলিঙ্ক পরিষেবা চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মাস্ক। এই প্রেক্ষাপটে ভারতও পিছিয়ে থাকতে নারাজ। টেলিকম জায়ান্ট এয়ারটেল এবং রিলায়েন্স জিও-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতের বাজারে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে স্টারলিঙ্ক। তবে, জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফরের পর থেকেই ভারতে স্টারলিঙ্ক নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। সম্প্রতি টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্টারলিঙ্কের ইন্টারনেট পরিষেবা ভারতে চালু করতে সরকারি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে স্পেসএক্স। তবে, সরাসরি স্যাটেলাইট-ভিত্তিক এই পরিষেবা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ভারত সরকার।

এই আশঙ্কার জেরে আগেই স্টারলিঙ্ককে ভারতে একটি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই কেন্দ্র থেকে স্টারলিঙ্কের সমস্ত ইন্টারনেট পরিষেবার উপর নজরদারি চালাবে ভারত সরকার। এর মাধ্যমে যেকোনো সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

স্টারলিঙ্কের ভারতে প্রবেশের পর ইন্টারনেট গতি দ্বিগুণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে এয়ারটেল এবং জিও ফাইবারের মতো সংস্থাগুলি মাসে ৫০০ টাকায় ওয়াইফাই পরিষেবা দিচ্ছে। কিন্তু স্টারলিঙ্কের পরিষেবা আমেরিকায় মাসে ১২০ ডলার (প্রায় ১০,০০০ টাকা) খরচ হয়। ভারতে স্টারলিঙ্কের দাম কত হবে, তা নিয়ে এখনও স্পষ্টতা নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারতের বাজারে স্টারলিঙ্কের পরিষেবা সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা কম।

স্টারলিঙ্কের পরিষেবা সরাসরি স্যাটেলাইট-ভিত্তিক হওয়ায় এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে মনে করছে ভারত সরকার। এর আগেও একবার ভারতে স্টারলিঙ্ক পরিষেবা চালুর প্রক্রিয়া শুরু হলেও জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে তা বন্ধ হয়ে যায়। এবার সরকার চাইছে, যেকোনো মূল্যে জাতীয় নিরাপত্তা যেন ক্ষুণ্ন না হয়।

ভারতের টেলিকম বাজারে ইতিমধ্যেই এয়ারটেল, জিও এবং ভোডাফোন আইডিয়ার মতো বড় খেলোয়াড়রা রয়েছে। স্টারলিঙ্কের প্রবেশ এই প্রতিযোগিতাকে আরও তীব্র করতে পারে। বিশেষ করে গ্রামীণ এবং দুর্গম অঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে স্টারলিঙ্ক একটি বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

স্টারলিঙ্কের ভারতে প্রবেশ ইন্টারনেট পরিষেবার গতি এবং প্রাপ্যতা বাড়াতে পারে। তবে, এর দাম এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সরকারের কঠোর নজরদারি এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এই পরিষেবাকে নিরাপদ এবং কার্যকর করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতে স্টারলিঙ্কের আগমন টেলিকম বাজারে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চলেছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy