
কুমারটুলির ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের কলকাতা শহরতলিতে নৃশংস খুন এবং দেহ লোপাটের চেষ্টা। উত্তর ২৪ পরগনার মুড়াগাছায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের পাশে এক ট্যাক্সি থেকে ট্রলি ব্যাগে ভরা যুবকের দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। সাধারণ মানুষের তৎপরতায় এই হত্যাকাণ্ড ফাঁস হয় এবং ঘটনায় ২ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ঘোলা থানার পুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম ভাগারাম সিং।
মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ মুড়াগাছার খেপলির বিলের কাছে একটি ট্যাক্সি দাঁড় করিয়ে ডিকি থেকে ভারী ট্রলি নামাচ্ছিলেন দুই যুবক। এই দৃশ্য দেখে সন্দেহ হয় ট্যাক্সিচালকের।
তিনি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে দুই যুবক।বেশি টাকা দিয়ে চালককে চলে যেতে বলে তারা, কিন্তু ক্যাব চালক রাজি হননি।তখনই সেখানে এসে পড়ে ঘোলা থানার টহলদারি ভ্যান।পুলিশকে দেখে দু’জনের মধ্যে একজন পালানোর চেষ্টা করলে ট্যাক্সিচালক তাকে ধরে ফেলে।পুলিশের সামনে ট্রলি ব্যাগ খুলতেই দেখা যায় ভিতরে যুবকের মৃতদেহ এবং ৬৫ হাজার টাকা।
ধৃত যুবক করণ সিং জানিয়েছে, মৃতদেহটি রাজস্থানের বাসিন্দা ব্যবসায়ী ভাগারাম সিংয়ের।ভাগারামের কাছে ৮ লক্ষ টাকা পাওনা ছিল কৃষ্ণরাম সিং নামে বড়বাজারের এক ব্যবসায়ীর।পাওনা টাকা না মেটানোয় মঙ্গলবার দুপুরে বড়বাজারের একটি গুদামে ভাগারামকে খুন করে কৃষ্ণরাম।প্রথমে কফিতে মাদক মিশিয়ে অজ্ঞান করা হয় ভাগারামকে।এরপর গলার নলি কেটে খুন করার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলায় ফাঁস দেওয়া হয়।মৃতদেহ স্যুটকেসে ভরে ১৬৫ নম্বর মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের এক গুদামে ফেলে রাখা হয়।
সন্ধ্যায় কৃষ্ণরাম বড়বাজার থেকে ট্যাক্সি নিয়ে নাগেরবাজারে পৌঁছয়।সেখান থেকে করণ সিংয়ের সঙ্গে আরও একটি ট্যাক্সিতে ওঠে তারা।উদ্দেশ্য ছিল ট্রলি ব্যাগটি মুড়াগাছার নির্জন জায়গায় ফেলে দেওয়া।কিন্তু ট্যাক্সিচালকের সন্দেহ এবং পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ে করণ সিং।অন্যদিকে, মোবাইল ট্র্যাক করে রাতেই গিরিশ পার্ক থেকে কৃষ্ণরামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে। ৬৫ হাজার টাকা কেন ট্রলি ব্যাগে রাখা ছিল—তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা।
প্রাথমিক অনুমান, এই টাকাও ভাগারামের ছিল, যা খুনিরা নিয়ে পালানোর পরিকল্পনা করেছিল।এই ঘটনা কুমারটুলির ট্রলি ব্যাগে মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। একের পর এক ট্রলি ব্যাগ কাণ্ডে আতঙ্কিত কলকাতা ও শহরতলির বাসিন্দারা।