সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে পরামর্শ দিয়েছেন, খাবার বেঁচে থাকার জন্য নিছক স্বাদগ্রহণের জন্যে না। আমাদের ঠিক সেটুকু খাবর দরকার যেটুকু বেঁচে থাকার জন্যে প্রয়োজন। তাই সুস্বাদু খাবার খাওয়ার লক্ষ্যে যা খুশি তাই করা ঠিক না।
প্রধানমন্ত্রীর এই পরামর্শকে অনেকেই সমালোচনা করেছেন। তাদের যুক্তি হল, ভারতে এখনও অনেক মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার পাওয়ার সুযোগ পায় না। এমনকি অনেক মানুষ অপুষ্টির শিকার। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ বাস্তবতাবিরোধী।
FAO-এর এক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সালে ভারতে ৭৪.১৯ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার আহার করতে অক্ষম ছিল। এর মানে হল, প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজন ভারতীয় স্বাস্থ্যকর খাবার পাওয়ার সুযোগ পায় না।
এর কারণ হল, খাদ্যের দাম ক্রমবর্ধমান। ২০২২ সালের মার্চ থেকে এপ্রিলে খাদ্য সামগ্রীর দাম শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি বেড়েছে। যার প্রভাব খাদ্যাভাসে পড়ছে। ফলে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী অনেকেই পাচ্ছেন না পুষ্টিকর খাবার।
তাছাড়া, ভারতে অপুষ্টির হারও বেশি। বিশ্বের ৯.২ শতাংশ মানুষ অপুষ্টির শিকার। চিনে অপুষ্টির শিকার ২.৫ শতাংশ মানুষ। ভারতে এই পরিমাণ ১৬.৬ শতাংশ।
অর্থাৎ, ভারতে এখনও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ বাস্তবতাবিরোধী।
প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শের মূল বিষয় হল, খাবার শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্যই খাওয়া উচিত। সুস্বাদু খাবার খাওয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করা উচিত নয়।
এই পরামর্শ অবশ্যই সঠিক। কিন্তু, ভারতের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই পরামর্শ বাস্তবায়ন করা কঠিন। কারণ, দেশে এখনও অনেক মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার পাওয়ার সুযোগ পায় না।
তাই, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ বাস্তবায়নের জন্য প্রথমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তারপর, মানুষকে স্বাস্থ্যকর খাবারের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।