বিশেষ: ৩০ বছরে বিমান বন্দর থেকে হারায়নি একটিও লাগেজ, জেনেনিন সেই বিমান বন্দরের নাম?

বিশ্বের সেরা বিমানবন্দর হওয়ার দৌড়ে সিঙ্গাপুর চাঙ্গি এবং কাতারের হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যে প্রায়শই তীব্র প্রতিযোগিতা লেগে থাকে। কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং ব্যতিক্রমী এক অর্জনের মাধ্যমে বিশ্বসেরা হওয়ার দাবি জানাচ্ছে জাপানের একটি বিমানবন্দর। দেশটির কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, গত ৩০ বছরে তাদের পরিষেবা থেকে একটিও যাত্রীর লাগেজ হারায়নি। এই খবর জানিয়েছে সিএনএন।

কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যা জাপানের সপ্তম ব্যস্ততম বিমানবন্দর, এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে ১৯৯৪ সালের সেপ্টেম্বরে এটি চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কোনো যাত্রীর ব্যাগ খোয়া যায়নি। এই সময়ের মধ্যে বিমানবন্দরটি দিয়ে প্রতি বছর গড়ে দুই থেকে তিন কোটি যাত্রী চলাচল করেছে। বিপুল সংখ্যক যাত্রী এবং লাগেজ হ্যান্ডেল করার পরও এই রেকর্ড ধরে রাখা এক বিরল কৃতিত্ব।

সাধারণত যাত্রাপথে লাগেজ ঠিকঠাক গন্তব্যে পৌঁছানো নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ থাকে, তাই কানসাইয়ের এই রেকর্ড নিঃসন্দেহে বিমানযাত্রীদের জন্য অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক। তবে কানসাই বিমানবন্দরের কর্মীরা এটিকে খুব বড় কিছু মনে করেন না। কানসাইয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা কেনজি তাকানিশি বলেন, “আমরা মনে করি না যে, আমরা বিশেষ কিছু করছি। আমরা কেবল রোজকার কাজটা করি এবং আমরা এর জন্যই স্বীকৃত। পুরস্কার পেয়ে আমরা অবশ্যই খুশি। আমি মনে করি, আমাদের কর্মীরা, বিশেষ করে যারা মাটিতে কাজ করছেন, তারা আরও সন্তুষ্ট হবেন।” তাঁর কথায় কর্মীদের নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বই এই সাফল্যের মূল কারণ।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সুপরিচিত এভিয়েশন র‌্যাংকিং এবং রেটিং ওয়েবসাইট স্কাইট্র্যাক্স গত এপ্রিল মাসে কানসাইকে ব্যাগেজ ডেলিভারির ক্ষেত্রে ‘বিশ্বসেরা বিমানবন্দরের’ স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি বিমানবন্দরের পরিষেবা মূল্যায়নের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি।

ওসাকা উপসাগরে একটি কৃত্রিম দ্বীপের ওপর নির্মিত হয়েছে কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ২০২৪ সালের জন্য স্কাইট্র্যাক্সের সামগ্রিক বিশ্বসেরা বিমানবন্দরের র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী কানসাইয়ের অবস্থান ১৮তম। এই তালিকায় থাকা জাপানের অন্যান্য বিমানবন্দর, যেমন টোকিওর নারিতা (পঞ্চম স্থান) এবং হানেদা (চতুর্থ স্থান), কানসাইয়ের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। সামগ্রিকভাবে ‘বিশ্বসেরা’ বিমানবন্দরের নামকরণের সময় সময়মতো লাগেজ পৌঁছানো ছাড়াও খাদ্য ও পানীয়ের অফার, সময়মতো আগমন ও প্রস্থানের হার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং যাত্রীদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সহ একাধিক বিষয় বিবেচনা করা হয়।

সুতরাং, সামগ্রিক তালিকায় প্রথম স্থানে না থাকলেও, ৩০ বছর ধরে একটিও লাগেজ না হারানোর মতো অবিশ্বাস্য রেকর্ড তৈরি করে কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রমাণ করেছে যে, নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে তারা সত্যিই বিশ্বসেরা এবং যাত্রী পরিষেবা ও নির্ভুলতার ক্ষেত্রে তারা একটি উচ্চ মান স্থাপন করেছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy