বিশেষ: ২০০০ বছরের পুরোনো এক সেনা ঘাঁটির সন্ধান মিললো মরুভূমিতে, জেনেনিন ঠিকানা?

সৌদি আরবের মরুভূমিতে ২ হাজার বছরের পুরোনো তিনটি রোমান সেনাঘাঁটির সন্ধান পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল প্রত্নতাত্ত্বিক সন্ধান পেয়েছেন এসব ঘাঁটির।

সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গবেষকদলের উদ্যোগে প্রত্নতত্ত্ব সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানসাময়িকী অ্যান্টিকিউয়িটিতে সাম্প্রতিক এ সন্ধানের ওপর পিআর রিভিউ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

যীশুখ্রিস্টের জন্মের এক শতাব্দি পর, ১০৬ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন নাবাতীয় রাজবংশের হাত থেকে বর্তমান সৌদি আরবসহ গোটা আরব উপদ্বীপের উল্লেখযোগ্য অংশ কেড়ে নেয় রোমান সাম্রাজ্য। তারপর থেকে ইসলাম আবির্ভাবের পূর্ব পর্যন্ত রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল সৌদি।

ধারণা করা হচ্ছে, আরব উপদ্বীপের যে ভূখণ্ডটি জর্ডান নামে পরিচিত, নাবতীয় রাজবংশের রাজধানী ছিল সেখানে। সেনা ঘাঁটিগুলোর সন্ধান যেসব অঞ্চলে পাওয়া গেছে, সেগুলো সৌদি-জর্ডান সীমান্ত থেকে খুব দূরে নয়। ধারণা করা হচ্ছে, নাবতীয় সম্রাটরা যেন ফের সৌদির দখল নিতে না পারেন- সেজন্য সীমান্ত চৌকি হিসেবে এই ঘাঁটিগুলো স্থাপন করেছিল রোমান সেনাবাহিনী।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক দলের অন্যতম সদস্য ড. মাইকেল ফ্রেডলি জানান, ‘আমরা প্রায় শতভাগ নিশ্চিত যে, এই ঘাঁটিগুলো প্রস্তুত করেছিল রোমান সেনাবাহিনী। সামরিক ঘাঁটিগুলোর নকশা অনেকটা তাসের আকৃতির। আশপাশের এলাকায় নজরদারির সুবিধার্থে প্রাচীন রোমান সামারিক ঘাঁটিগুলো এই নকশাতেই তৈরি করা হতো।’

তবে ১০৬ খ্রিস্টাব্দে যখন এই ঘাঁটিগুলো প্রস্তুত করা হয়, তখনও নাবতীয় শাসকদের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর সঙ্গে রোমান সেনাবাহিনীর যুদ্ধ চলছিল বলে জানিয়েছেন অক্সফোর্ডের প্রত্নতত্ত্ববিদরা।

এই দলের আরেক প্রত্নতত্ত্ববিদ ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইক বিশপ আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনালকে বলেন, ‘প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্য ছিল বিশাল। সেই সাম্রাজ্যের বিভিন্ন প্রদেশ দখলে রাখতে দুর্গ তৈরি করত রোমান শাসকরা; কিন্তু যুদ্ধের সময় কোনো এলাকা দখলের পর তা কীভাবে নিজের এক্তিয়ারে রাখতে হয়, সে ব্যাপারটিও তারা জানত এবং তার প্রামাণ এই সামরিক ঘাঁটির নিদর্শনগুলো।

ঠিক কতগুলো ঘাঁটির নিদর্শন পাওয়া গেছে, তা জানা যায়নি- তবে প্রতিটি ঘাঁটির মধ্যকার দূরত্ব ৩৭ থেকে ৪৪ কিলোমিটার। এই দূরত্বের কারণে তখনকার দিনে যে কোনো পদাতিক বাহিনীর পক্ষে একদিনে সব ঘাঁটিতে সর্বাত্মক আক্রমণ চালানো প্রায় অসম্ভব ছিল।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy