বিশেষ: শিগ্রই দল বেঁধে আক্রমণ করবে বিষধর সাপ, ভয়ঙ্কর ঝুঁকির তালিকায় কোন কোন দেশ?

আবাসস্থল হারিয়ে বিষধর সাপ দল বেঁধে নতুন নতুন দেশে আক্রমণ করবে। এ অবস্থায় প্রাণঘাতী সাপ ছোবল দিলে যেসব দেশে উন্নত চিকিৎসাসহ কোনো ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি নেই, সেসব দেশের মানুষ সবচেয়ে ঝুঁকিতে পড়বে- এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছেন গবেষকেরা।

গবেষণায় বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশ নেপাল, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মিয়ানমার, চীন এবং আফ্রিকার নামিবিয়া, নাইজার এই ঝুঁকির তালিকায় শীর্ষ রয়েছে।

ল্যানচেট প্ল্যানেটারি হেলথ জার্নাল-এর উদ্ধৃতি দিয়ে শুক্রবার এ খবর প্রকাশ করেছে দ্য গার্ডিয়ান।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দরিদ্রতম দেশসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশ।

গবেষণাটি ২০৯ প্রজাতির বিষধর সাপের ভৌগোলিক অবস্থানের ওপর করা হয়েছে। বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ২০৭০ সালের মধ্যে এসব প্রাণী নিজ আবাসস্থল হারিয়ে ফেলবে। ক্রান্তীয় এবং উপ-ক্রান্তীয় অঞ্চলে এদের আবাসস্থল দ্রুত কমে যাবে। তখন এসব প্রাণী অনুকূল পরিবেশের খোঁজে দলবদ্ধভাবে বেরিয়ে পড়বে। তবে পশ্চিম আফ্রিকার সবচেয়ে বিষধর গ্যাবুন ভাইপার, ইউরোপের অ্যাসপ এবং হর্নড ভাইপারের আবাসস্থল অন্য জায়গার যথাক্রমে ২৫০ শতাংশ এবং ২০০ শতাংশ বেড়ে যাবে।

অন্যদিকে আফ্রিকার বিলুপ্তপ্রায় প্রাণঘাতী বুশ ভাইপার এবং আমেরিকার হোগনোজড পিট ভাইপারের আবাসস্থল ৭০ শতাংশ কমে যাবে।

গবেষণার মূল লেখক ব্রাজিলের অধ্যাপক পাবলো এ্যারিয়েল মার্টিনেজ জানিয়েছেন, বিপুল পরিমাণে বনভূমি কেটে কৃষিকাজ ও গোবাদি-পশুর চারণভূমি করা হচ্ছে। এতে করে এমনসব বিষধর সাপ তাদের পুরোনো আবাসস্থল হারিয়ে ফেলছে। এমন পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে এরা চাষাবাদের জমি এবং চারণভূমিতে বসবাসের নতুন নতুন কৌশল খুঁজে বের করবে। সেই সঙ্গে খাবারের উৎস হিসেবে তারা তখন ইঁদুরকে বেছে নেবে।

অধ্যাপক পাবলো এ্যারিয়েল মার্টিনেজ আরো বলেন, নতুন নতুন স্থানে এদের ব্যাপক উপস্থিতি ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। যেসব দেশের আগে থেকে প্রস্তুতি নেই, তারা কিভাবে নিজেদের পরিবেশ বাসিন্দাদের জন্যে নিরাপদ রাখবে সেটি এখন থেকেই ভাবতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি বছর বিষধর সাপের ছোবলের শিকার হয় ১৮ থেকে ২৭ লাখ মানুষ। এদের মধ্যে মারা যায় ১ লাখ ৩৮ হাজার। কমপক্ষে ৪ লাখ মানুষ অঙ্গ হারান অথবা চিরদিনের জন্যে পঙ্গু হয়ে যায়।

ক্রান্তীয় অঞ্চলে সাপে কাটার বিষয়টি চরমভাবে উপেক্ষা করা হয় বলে অভিযোগ করে সংস্থাটি।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy