বিশেষ: চাঁদের বয়স হতে পারে? ধারণার চেয়ে অনেক বেশি!- জেনেনিন কি বলছে গবেষকরা?

চাঁদের বয়স আগের ধারণার চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে বলে উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।

গ্রহ বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রায় ৪৩৫ কোটি বছর আগে ফের গলে গিয়েছিল চাঁদের পৃষ্ঠ। আর, এর ফলেই ঢেকে গেছে উপগ্রহটির অনেক পুরানো বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যওয়ালা আগের পৃষ্ঠ।

ধারণা করা হয়, চাঁদ তৈরি হয়েছে মঙ্গল গ্রহের আকারের কোনো আদি গ্রহের সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষের সময়। এটি ছিল গ্রহ হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ের একটি শিলা। আর এই সংঘর্ষটি ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে দানব আকারের প্রভাব ফেলা সর্বশেষ ঘটনা।

বিজ্ঞানীরা চাঁদের পাথরের নমুনা সংগ্রহ করে সেই সংঘর্ষের তারিখ অনুমান করেছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ।

পাথরের এইসব নমুনা চাঁদের প্রাচীন ম্যাগমা মহাসাগর থেকে স্ফটিক হয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয়। তবে সংঘর্ষের পরেও এগুলো চাঁদের পৃষ্ঠে রয়ে যায়। এসব নমুনা বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন, চাঁদের বয়স হতে পারে আনুমানিক ৪৩৫ কোটি বছর।

তবে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার’-এ প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া সান্তা ক্রুজ’-এর অধ্যাপক ফ্রান্সিস নিম্মো ও তার সহকর্মীরা যুক্তি দিয়ে বলেছেন, এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে চাঁদের বয়স।

গবেষকদের মডেল অনুসারে, গরম ও ঠাণ্ডা উভয় সময়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছিল চাঁদ, ফলে এর পৃষ্ঠটি ঠাণ্ডা হয়ে কঠিন হওয়ার পর তা আবারও উত্তাপে গলে যায়।

যার মানে হচ্ছে, চাঁদের শিলার এসব নমুনা অনেক আগের সময়ের হতে পারে। এই ‘পুররায় গলে যাওয়া’ পৃষ্ঠেই লুকিয়ে আছে চাঁদের পুরানো বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য।

চাঁদের তাপীয় মডেল, এর জ্বালামুখ ও নির্দিষ্ট কিছু খনিজ পদার্থের বয়স পর্যবেক্ষণ করে অধ্যাপক নিম্মো ও তার গবেষণা দলটি এখন ধারণা করছে, চাঁদের বয়স হতে পারে ৪৫১ কোটি বছর পর্যন্ত। অর্থাৎ আগে যে বয়স ধারণা করা হয়েছিল এর চেয়ে এখনকার হিসাবে যোগ হচ্ছে আরও ১৬ কোটি বছর।

প্রায় ৪০০ কোটি বছর আগে গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষের পরেও চাঁদের পৃষ্ঠে কেন ধারণার চেয়ে কম গর্ত রয়েছে তা’ও এ গবেষণায় ব্যাখ্যা করেছেন গবেষকরা।

গবেষণা বলছে, চাঁদ উত্তপ্ত বা গরম হয়ে ওঠার কারণে এর পৃষ্ঠের বিভিন্ন গর্ত মুছে যেতে পারে।

এই মুহুর্তে চাঁদের প্রতি আগ্রহ রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছানোর জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতা করছে এসব দেশ। তাদের ধারণা, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পানি থাকতে পারে।

এদিকে, মানুষকে মঙ্গল গ্রহে পৌঁছাতে সহায়তা করার জন্য চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy