কীভাবে ভূমিকম্পের আগাম সংকেত পায় তা এখনও বিজ্ঞানীদের কাছে রহস্য। তবে, কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে কুনো ব্যাঙ ভূমিকম্পের আগে মাটিতে শব্দের তরঙ্গের পরিবর্তন অনুভব করতে পারে। এছাড়াও, ভূমিকম্পের আগে বাতাসের চাপ এবং তাপমাত্রার পরিবর্তনও কুনো ব্যাঙ অনুভব করতে পারে।
কুনো ব্যাঙ ভূমিকম্পের আগাম সংকেত দিতে পারে। ভূমিকম্পের অন্তত এক সপ্তাহ আগে এরা অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:
ব্যাঙগুলো বেশি চিৎকার করে।
ব্যাঙগুলো জল থেকে বেরিয়ে আসে এবং মাটিতে বসে থাকে।
ব্যাঙগুলো তাদের আবাস ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যায়।
যুক্তরাজ্যের ওপেন ইউনিভার্সিটির প্রাণীবিদ ড. রাসেল গ্রান্ট ইতালির একটি লেকে কুনো ব্যাঙ নিয়ে গবেষণা করে এ বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন। তিনি গবেষণা শুরু করার ২৯ দিনের মাথায় ওই লেক এলাকায় ৬.৩ মাত্রায় ভূমিকম্প হয়। পরে তিনি তথ্য পর্যালোচনা করে দেখেন ভূমিকম্পের ঠিক ছয় থেকে সাত দিন আগে কুনো ব্যাঙগুলো অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। এছাড়া পাঁচ দিনের মাথায় তারা নিজেদের আবাস ছেড়ে বেড়িয়ে যায়। এরপর তিন দিনের মাথায় সেই জায়গা ছেড়ে কুনো ব্যাঙগুলো অন্য জায়গায় চলে যেতে থাকে। ব্যাঙগুলো ঘর ছাড়ার তিন দিনের মাথায় ওই এলাকায় প্রবল ভূমিকম্প হয়।
কুনো ব্যাঙ কীভাবে ভূমিকম্পের আগাম সংকেত পায় সে সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন। তবে তারা ধারণা করেন যে ভূমিকম্পের আগে নির্গত শক্তির কারণে ব্যাঙগুলো এমন আচরণ করে। ভূমিকম্পের আগাম সংকেত দিতে পারে এমন অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে রয়েছে ইঁদুর, মাকড়সা, পোকামাকড় ইত্যাদি। বিজ্ঞানীরা এসব প্রাণী নিয়ে আরও গবেষণা করে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার একটি নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি তৈরি করার চেষ্টা করছেন।
কুনো ব্যাঙ ভূমিকম্পের আগাম সংকেত দিলে আমরা সতর্ক হতে পারি এবং ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি। তাই, আমরা আমাদের আশেপাশে থাকা কুনো ব্যাঙদের অবহেলা না করে তাদের যত্ন নেওয়া উচিত।
কুনো ব্যাঙ ভূমিকম্পের আগাম সংকেত দেওয়ার ক্ষমতা একটি অমূল্য সম্পদ। এটি আমাদের ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে। তাই, আমরা কুনো ব্যাঙদের যত্ন নেওয়া এবং তাদের সংরক্ষণ করা উচিত।
কুনো ব্যাঙ ভূমিকম্পের আগাম সংকেত দেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে আরও গবেষণা করা দরকার। এটি আমাদের ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য আরও সঠিক এবং নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি তৈরি করতে সাহায্য করবে।