বিশেষ: এ বছর কার হাতে উঠছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার? প্রস্তাবের তালিকায় ২৮৬ জন

চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু হয়েছে আজ। যা চলবে আগামী ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রথম দিনেই চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিভাগে পুরস্কারজয়ী দুজনেই মার্কিন বিজ্ঞানী।

আগামী ১১ অক্টোবর নোবেলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে নরওয়ের নোবেল ইনস্টিটিউট থেকে। স্থানীয় সময় সকাল ১১টা।

বিশ্বের সবচেয়ে নন্দিত এই পুরস্কার কে পাচ্ছেন সেদিকে সারা বিশ্বের মানুষের নজর থাকে। সবচেয়ে বেশি আগ্রহের বিষয় শান্তিতে নোবেল। এ পুরস্কার প্রাপ্তির তালিকায় এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, চলতি বছরের তালিকায় সম্ভাব্য নামের মধ্যে সংস্থা হিসেবে রয়েছে ইউনাইটেড ন্যাশনস প্যালেস্টিনিয়ান রিফ্যুজি এজেন্সি। আছে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের নামও। আর ব্যক্তি হিসেবে যার নামটি বেশি শোনা যাচ্ছে তিনি হলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

সংশ্লিষ্টদের বরাতে রয়টার্স অবশ্য একটি ভিন্ন কথাও বলছে। চলতি বছর নাকি বিস্ময়করভাবে শান্তিতে নোবেলজয়ী হিসেবে কারো নাম না-ও ঘোষণা হতে পারে।

এদিকে রাশিয়ার আলেক্সি নাভালনির নাম উচ্চারিত হচ্ছে কারো কারো মুখে। কিন্তু সেটি সম্ভব নয় কারণ কাউকে মরণোত্তর পুরস্কার দেওয়ার রেওয়াজ নেই নোবেল কমিটির।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে নিয়ে আলোচনা থাকলেও সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ। তৃতীয় বছরে পড়া ইউক্রেনের যুদ্ধ কিংবা সুদানে এক কোটি মানুষের বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে নোবেল কমিটি এ বছর এমন কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে পারে যিনি বা যেই সংগঠন বিশ্বে মানবিক সংকট কাটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

এসব বিবেচনায় ইউনাইটেড ন্যাশনস প্যালেস্টিনিয়ান রিফ্যুজি এজেন্সি হতে পারে চলতি বছরের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের দাবিদার। গাজা যুদ্ধে সৃষ্ট মানবিক সংকট কাটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে সংস্থাটি, এমনটাই মনে করেন অসলোর পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক হেনরিক উরডাল।

নোবেল কমিটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তৈরি হওয়া বিশ্ব্যব্যবস্থায় ঐ সময়ে সৃষ্ট আন্তর্জাতিক সংগঠন জাতিসংঘকে বিবেচনা করতে পারে। সেক্ষেত্রে জাতিসংঘের মহাসচিব বর্তমান মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস হতে পারেন চলতি বছরের শান্তিতে নোবেল জয়ী। সেইসাথে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসও যৌথভাবে এই তালিকায় যুক্ত হতে পারে বলে মনে করেন শান্তি নোবেল বিষয়ের ইতিহাস বিশারদ আসলে স্ভিন।

রয়টার্সকে এ ইতিহাসবিদ বলেন, গুতেরেস হলেন জাতিসংঘের সর্বোচ্চ প্রতীক। আর ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের মূল দায়িত্ব হলো, বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করা। এরই মধ্যে রাশিয়ায় হামলার নিন্দা জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস। তাছাড়া গাজায় যেন কোনোভাবেই জেনোসাইডের মতো ঘটনা না ঘটে সে বিষয়েও ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে।

বলা হচ্ছে, নোবেল কমিটি এমন সিদ্ধান্তও নিতে পারে যে, চলতি বছর কেউই এই পুরস্কার পাবে না। নোবেল কমিটি যদি এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সেটি হবে পাঁচ দশক পর এমন কোনো ঘটনা।

সর্বশেষ ১৯৭২ সালে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নোবেল কমিটি। স্টেকহোমে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান ড্যান স্মিথ বলেন, চলতি বছর নোবেল পিস প্রাইজ কমিটি শান্তিতে পুরস্কার দেওয়া বন্ধ রাখতে পারে। বরং তারা বলতে পারে যে, এটি (পৃথিবী) একটি যুদ্ধে লিপ্ত গ্রহ।

উল্লেখ্য, চলতি বছর শান্তি পুরস্কারের জন্য ২৮৬ জন ব্যক্তি ও সংস্থার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে জেলে বন্দি ইরানের নারী অধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মাদি নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy